
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হুদাপাড়া সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আলী আকবর (৫৬) নামের একজনকে বেধড়ক মারধর, রাইফেলের বেয়ানেট দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে আলী আকবরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা এ সময় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
এর আগে শনিবার (২৬ জুলাই) ভোরে স্থানীয় এক যুবক ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন এবং পরিবারের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে গ্রাম্য চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং হাত-পায়ে ক্ষত স্থানগুলোতে একাধিক সেলাই দেয়া হয়। বিষয়টি পারিবারিকভাবে গোপন করার চেষ্টা করে।
আহত আলী আকবর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের মাজপাড়ার মরহুম নুর ইসলামের ছেলে।
আহত বৃদ্ধ আলী আকবর বলেন, ‘খুব সকালে চা পান শেষে হুদাপাড়া সীমান্তের কাছাকাছি গেলে তিনজন বিএসএফের সদস্যরা আমাকে ধরে বেধড়ক পেটাতে থাকে। তাদেরকে বলি, আমি সীমান্ত অতিক্রম করিনি আমাকে ছেড়ে দেন, তবুও তারা আমাকে রাইফেলের সামনের অংশ দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে খোচাতে থাকে এবং পেটাতে থাকে। এরপর আমাকে ফেলে রেখে তারা চলে যায়।’
স্ত্রী ময়না খাতুন বলেন, ‘ওই দিন ভোর বেলা স্থানীয় এক যুবক হুদাপাড়া সীমান্তের পাশে একটি কৃষি জমিতে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে নিয়ে এসে আমাদেরকে কাছে নিয়ে আসে। তার শরীরের পায়ে ও হাতসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় কুড়ুলগাছি গ্রামের হাসপাতালপাড়ার পারভিন ড্রাগ হাউজ ফার্মেসিতে ডা: আকরাম হোসেনের (সাবেক উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার) মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। এক হাত ও পায়ে ক্ষতস্থানে একাধিক সেলাই দেয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সিদ্দীক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমিও ঘটনাটি শুনেছি, বিএসএফের সদস্যরা আলী আকবরকে বেধড়ক মারধর করেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক নাজমুল হাসান বলেন, ‘তিনি মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন বলে তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি। সীমান্তের কোনো পিলার এবং কোন স্থানে ঘটনাটি ঘটেছে তা বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদিও এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে এটা ঠিক হয়নি। অন্যায়ভাবে কেউ কাউকে মারধর করতে পারে না। কোনো কিছু ঘটলে আইনের মাধ্যমে সমাধানে যাওয়া উচিত।’