Image description

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১১ মাসে সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন এবং অবস্থান কর্মসূচির মতো ঘটনা ঘটেছে অর্ধশতাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, রিকসা চালক থেকে শুরু করে বিডিআর ও আনসার সদস্যরাও বাদ যাননি। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বদলে দাবি-দাওয়া আদায়ের প্রধান কেন্দ্র যেন হয়ে উঠেছে সচিবালয়।

এসব কর্মসূচি চলাকালে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই স্থাপনার গেট ভেঙে হামলা-ভাঙচুরের অন্তত চারটি ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের পদত্যাগ দাবিতে সচিবালয়ে শত শত শিক্ষার্থী ঢুকে পড়ে। নির্বিচারে ভাঙচুর করা হয় গাড়িসহ নানা স্থাপনা।

এখন প্রশ্ন উঠছে কেন বারবার আন্দোলন ও দাবি-দাওয়ার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠছে সচিবালয়?

এ বিষয়ে সাবেক সচিব আব্দুল আওয়াল মজুমদার বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যে বিশৃঙ্খল অবস্থার তৈরি হয়েছিল, তা এখনও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি সরকার। ফলে বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও সরকারের কঠোরতার বার্তাও আন্দোলনকারীদের কাছে যায়নি। এছাড়া, প্রথমদিকে কঠোর না হওয়ায় বাকিরাও সুযোগ নিয়েছে।

এদিকে সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশ চালাচ্ছে, কিন্তু তাদের সেন্টার পয়েন্টকে তারা রক্ষা করতে পারছে না। এটি সরকারের একটি বড় দুর্বলতা।

এমন অবস্থার জন্য মন্ত্রণালয়, আমলা ও বিভিন্ন সংস্থায় যারা দ্বায়িত্বশীলদের অদক্ষতা এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে না পারাকেও দায়ী করছেন সাবেক এই সচিবরা।

আবু আলম শহীদ খান বলেন, এই ঘটনার পুরো দায় সরকারের উপদেষ্টাদের। তারা ভুল পদক্ষেপ নিয়েছেন। এইচএসসি পরীক্ষা রাত সাড়ে তিনটার দিকে কেন স্থগিত করতে হবে?

আব্দুল আওয়াল মজুমদার বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো সিদ্ধান্ত দেরিতে নেয়ায় সংশ্লিষ্টরা ভুল শিকার করলে এমনটা ঘটতো না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের এমন দুর্বলতা এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে সরকারকে সর্তক থাকার কথা বলেন সাবেক এই দুই সচিব।

এ প্রসঙ্গে আবু আলম শহীদ খান বলেন, সরকার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেবে কেন, যেখানে মব হবে ও ফ্যাসিবাদের দোসরা ঢুকে পড়বে। অতীতে সরকার নিজের অক্ষমতা ও ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে। এই সরকারও তাই করবে।

সাবেক সচিব আব্দুল আওয়াল মজুমদার বলেন, আওয়ামী লীগ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবেই। এছাড়া দলটির উস্কানিও থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে হবে। তবে মব থামাতে সংশ্লিষ্টরা সেভাবে চেষ্টা করছে না। বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব নয়।

এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জনগনকে আস্থায় আনার পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচন দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন সাবেক এই দুই সচিব। তবে নির্বাচন নিয়েও শঙ্কার কথা জানান তারা।