
প্রতিটি মায়ের কাছে একমাত্র ছেলে যক্ষ্মের ধনের মতো। সেই বুকের মানিক হারিয়ে আম্বিয়া বেগমের এখন দুনিয়া আঁধার। ছেলে সাগরের স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তিনি। দিনভর ক্ষণে ক্ষণে শুধু কাঁদেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঝরে যাওয়া এক তরতাজা প্রাণ শহীদ সাগর হাওলাদার (১৭)। তিনি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা গ্রামের নুরুল হক হাওলাদারের ছেলে।
গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন সাগর। ১৯ জুলাই ঢাকার আবাহনী মাঠের কোণে পুলিশ বক্সের কাছে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গুলিতে তিনি মারাত্মক আহত হন।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা নুরুল হক এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু আর্থিক সংকটে তা হচ্ছে না। শহীদ সাগরের বাড়িতে এখন কান্না ছাড়া যেন আর কিছুই নেই। বৃদ্ধ দাদা আব্দুল মজিদ হাওলাদারও (৭৫) উঠানে বসে সারাক্ষণ নীরবে কাঁদেন।
সাগরের একমাত্র ছোট বোন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম খানম এখন অনেকটাই নির্বাক। সারাক্ষণ চুপচাপ বসে কী যেন ভাবে! কেউ ডাকলেও সাড়া দেয় না। হয়তো ভাইয়ের স্মৃতি আওড়ে নীরব দহনে পোড়ে।
শহীদ সাগরের চাচা মইনুল হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালের মে মাসে সাগর ঢাকায় গিয়েছিল। ওর স্বপ্ন ছিল বিদেশ গিয়ে অনেক টাকা আয় করে বাড়িতে পাকা দালান তুলবে। ওই দালানে সবার জন্য আলাদা রুম থাকবে। এ ছাড়া বোনের পড়াশোনার খরচ চালাবে। মায়ের জন্য কাজের লোক রেখে দেবে। সাগরের স্বপ্ন আর পূরণ হলো না! যারা আমার ভাতিজাকে গুলি করে হত্যা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই!’