
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন যুবতী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রথমে আসেন ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে। সেখান থেকে উঠতে চাইছিলেন চট্টগ্রামগামী কোনো ট্রেনে। কিন্তু তিনি ভুলে উঠে পড়েন উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেসে। ট্রেনে উঠেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ঘণ্টা দেড়েক পর ঘুম ভাঙলে যাত্রীদের কাছে জানতে পারেন তিনি ভুল ট্রেনে উঠেছেন। সামনে টাঙ্গাইল স্টেশন। যাত্রীদের পরামর্শে সেখানে নেমে যান ওই যুবতী। চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য তিনি রেলওয়ে পুলিশের সহায়তা চান। কিন্তু তিনি ঢাকা বা চট্টগ্রামের কোনো উঠতে পারেননি। বরং স্টেশন এলাকায়ই গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দিবাগত রাতে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, টাঙ্গাইল সদর থানার ব্রাহ্মণকুশিয়া সুতারপাড়া এলাকার সেন্টু চন্দ্র দাশের ছেলে দুলাল চন্দ্র (২৮), হালিম খানের ছেলে সজীব খান (১৯) এবং মৃত কিসমত মিয়ার ছেলে রুপু মিয়া (২৭)। গ্রেপ্তাররা সবাই পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। শনিবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘারিন্দা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হারুন উর রশীদ বলেন, ভুক্তভোগী নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য শুক্রবার রাতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থেকে ঢাকা এয়ারপোর্ট রেলস্টেশনে আসেন। পরে সেখান থেকে তিনি ভুলবশত উত্তরবঙ্গগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে পড়েন। ট্রেনে উঠে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন, পরে ঘুম ভাঙলে যাত্রীদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে টাঙ্গাইলে থাকার কথা এবং ভুল ট্রেনে ওঠার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে যান ওই নারী এবং স্টেশনে থাকা জিআরপি পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে কালিহাতী উপজেলার সল্লায় একটি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জিআরপি পুলিশ সেখানে চলে যায়। এ সময় পুলিশের এক সদস্য অটোরিকশাচালক দুলালকে ওই নারীকে ঢাকার ট্রেনে উঠিয়ে দেয়ার কথা বলেন। কিন্তু দুলাল যুবতীকে প্রথমে স্টেশনের পিছনে কাঠবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে স্টেশন সংলগ্ন ব্রাহ্মণকুশিয়ায় রুপু মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রুপু মিয়া ও সজীব খান দলবেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। ভোরের দিকে ভুক্তভোগী নারী রেলস্টেশনে গিয়ে পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানান। তখন রেলপুলিশ টাঙ্গাইল থানাকে অবগত করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শনিবার সকালের দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। টাঙ্গাইল থানার ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, ওই নারী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হবে।