
অমাবস্যা ও সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারের সাগর তীরবর্তী উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক।
সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া, নাজিরার টেক, পেশকার পাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সমিতিপাড়া, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর ও শৈবাল পয়েন্টে বেশকিছু ঝাউগাছ উপড়ে গেছে। সাগর উত্তাল রয়েছে।
এদিকে আজ শুক্রবার হওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক অবস্থান করছে। সারাদিন ভারি বর্ষণের সঙ্গে সাগর উত্তাল থাকায় অধিকাংশ পর্যটককে হোটেল-রেস্তোরাঁয় অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেলে সৈকতে হাজারো পর্যটক ঘুরতে বেরোয়।
আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় (২১.৩° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৬° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
তিনি বলেন, এটি আজ (২৫ জুলাই) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
জানা গেছে, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।