Image description

নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা উপলক্ষে পুলিশ লাইনস স্কুল দুদিন বন্ধ রাখার নোটিশ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে নোটিশটিকে ‘ফেক’ বলে দাবি করে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার এক প্রতিবাদলিপিতে জানানো হয়, আগের নোটিশটি সঠিক নয়। রবি ও সোমবার বিদ্যালয়ে যথারীতি ক্লাস হবে।

সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনায় এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আগামী রোববার দুপুরে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরোনো কালেক্টরেট মাঠে পথসভা করবে দলটি। এ জন্য শহরের কুড়পাড় এলাকায় পুলিশ লাইনস স্কুল দুদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এনসিপির কর্মসূচির নিরাপত্তার জন্য আসা ৬০ জন পুলিশ সদস্য অবস্থান করবেন বলে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার নোটিশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার একপর্যায়ে আজ সকালে গণমাধ্যমে নতুন করে ‘প্রতিবাদলিপি’ পাঠায় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবারের নোটিশে বলা হয়, রোববার এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে নেত্রকোনায় আসা পুলিশ ফোর্স এই বিদ্যালয়ে অবস্থান করবে। সে জন্য রবি ও সোমবার বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। আগামী মঙ্গলবার থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে। ২৭ তারিখের পরীক্ষা ২৯ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে। নোটিশটি যথারীতি বিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপেও পোস্ট করা হয়।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক আজ সকালে মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এনসিপির সমাবেশ উপলক্ষে বাইরে থেকে বাড়তি পুলিশ আসবে, তাদের পুলিশ লাইনস স্কুলে থাকতে দেওয়া হবে। তাই বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রায় ১০টির মতো বড় শ্রেণিকক্ষ আছে। আশা করি, থাকার সমস্যা হবে না।’

আবদুল খালেক আরও বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিশুশ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ২৫০ শিক্ষার্থীকে ১৬ জন শিক্ষক পাঠদান করেন।

এ বিষয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান বলেন, ‘এটি একটি ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে। আমাদের বিব্রত করার জন্যই কোনো একটা চক্র ইচ্ছাকৃতভাবেই এসব করছে। অন্যান্য জেলার মতো আমরাও শুধু সভা সমাবেশ করার আগে প্রশাসনের কাছে আইনি নিরাপত্তা চেয়েছি। পুলিশ লাইনস স্কুলের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের সঙ্গে আমাদের কারও পরিচয় নেই।’

ফাহিম রহমান খান পাঠান আরও বলেন, ‘এনসিপির প্রোগ্রাম উপলক্ষে পুলিশ লাইনস স্কুল বন্ধ করতে পারে না। আর করলে এর দায় একান্তই স্কুল কর্তৃপক্ষের। এনসিপির প্রোগ্রাম উপলক্ষে কেউ কোনো প্রতিষ্ঠান, কাজকর্ম বন্ধ রাখলে তার দায় এনসিপি নেবে না। আপনারা যতভাবেই এ নিয়ে যাচাই-বাছাই করুন, এর সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পৃক্ততা পাবেন না। এটি নিছক একটি ষড়যন্ত্র। তদন্ত করে এটি বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, ‘পুলিশ লাইনস স্কুলে পুলিশ অবস্থান করবে বলে পরীক্ষা স্থগিত ও বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এ বিষয়টি সঠিক নয়। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াতে হয়তো বলা হচ্ছে। স্কুল সঠিক নিয়মেই চলবে। আর বাইরে থেকে আসা ৬৬ জন পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনসেই রাখা হবে।’

উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে এনসিপির পথসভা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কক্সবাজারে এনসিপির নেতার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে চকরিয়ায় মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর থেকে দলটি যেখানে সমাবেশ করছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিচ্ছেন। রোববার নেত্রকোনায় দলটির সমাবেশ ঘিরে চার শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বাইরে থেকে ৬৬ জন পুলিশ সদস্যকে আনা হবে।