Image description

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয় এর পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো . তৌকির ইসলামকে । তখনো তাঁর দেহে প্রাণ ছিল । প্যারাস্যুট না খোলায় পাইলট অনিয়ন্ত্রিত গতিতে মূল দুর্ঘটনাস্থলের অদূরেই পড়ে গুরুতর আহত হন । তবে ভয়াবহ আগুন থেকে সবাই শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ব্যস্ত থাকায় তাঁর বিষয়টি কারও নজরে আসেনি । পাইলটকে উদ্ধারকারী ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ ঘটনার বিষয়ে বিশদ জানিয়েছেন ।

মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মো . মকবুল হোসেন তাঁদের একজন । পাইলট তৌকির ইসলামের সন্ধান পাওয়ার পর মো . মকবুল হোসেন‍ই প্রথম তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন । মকবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন , যুদ্ধবিমানটি হায়দার পাইলট তৌকির ইসলাম আলী ভবনের প্রবেশমুখে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সবাই সেদিকে দৌড় দেন । আটকা পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করতে থাকেন তাঁরা । সেদিকেই ব্যস্ত ছিলেন সবাই । একপর্যায়ে সেনাসদস্যরা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চলে আসেন । চারদিকে কান্না ও হাহাকার চলতে থাকে । 

মকবুল হোসেন আরও বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা পর জুনিয়র মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাহেদা দেখেন , হায়দার আলী ভবনের উত্তর পাশে একটি ঝাউগাছে একটি প্যারাস্যুট ঝুলছে । তিনি বিষয়টি মকবুল হোসেনকে জানান । এরপর মকবুল হোসেন সেখানে দৌড়ে যান । প্যারাস্যুটটি যেখানে ঝুলছিল , ঠিক তার সোজা সামনের কক্ষটিতে ছিল কলেজের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ । টিনের চালা ভেঙে সে কক্ষেই পড়েন পাইলট । তখনো তাঁর শরীর যুদ্ধবিমানের ইজেকশন সিটের সঙ্গে যুক্ত ছিল ।

মকবুল হোসেন বলেন , “পাইলট তৌকির ইসলাম তখনো সিটের সঙ্গে আটকা অবস্থায় ছিলেন । অচেতন অবস্থায় ডানদিকে কাত হয়ে ছিলেন । আমরা তাঁকে সেই অবস্থায়ই উদ্ধার করি । সেনা সদস্যরা এসে পাইলটকে সিট থেকে বের করে কলেজের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের কক্ষে নিয়ে যান । সেখানে আমি প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করি । ” 

মকবুল জানান , তিনি তৌকিরের পাল্স ( নাড়ির গতি ) পেয়েছিলেন । মুখে সামান্য রক্ত থাকলেও বাইরে থেকে শরীরে বড় কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি । রক্তচাপ ছিল ১০০-৬০ । অর্থাৎ তখনো তৌকির জীবিত ছিলেন । এটা নিশ্চিত হতেই সেনাসদস্যরা তাঁকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান । গুরুতর আহত পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো . তৌকির ইসলামকে শেষপর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি ।