Image description

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের (ক্রিমিনাল আখ্যা দিয়ে) অভিযোগ তুলে এর প্রতিকার ও নিজের সুরক্ষা চেয়ে মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা করা মেহরীন আহমেদ নামের সেই তরুণীর সঙ্গে তার অভিভাবকদের আপস হয়েছে। আপস হওয়ার কারণে তার আর কোনো আপত্তি না থাকায় মামলাটি খারিজ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আপসের কথা জানান তিনি। এ সময় তার বাবা নাসির আহমেদ ও মা জান্নাতুল ফেরদৌসও উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, উভয় পক্ষের মধ্যে আপস-মীমাংসা হওয়ায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম মামলাটি খারিজ করে দেন।

রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এ শিক্ষার্থী মেহরীন আহমেদ গত ২২ জুন এই মামলা করেছিলেন। পরে তার মা-বাবাকে আদালত তলব করলে ১০ জুলাই মামলার শুনানি হয়। এদিন তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার পিতা মাতা ক্রিমিনাল, তারা আমার কাছে পিতা-মাতা নন। আমি চাই এ ভিডিওটা সারা ওয়ার্ল্ডে ভাইরাল করতে। জন্ম থেকে আমি সাফার করছি। দে আর চাইল্ড অ্যাবিউজার। তারা আমাকে অপব্যবহার করেছেন। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’

শুনানিতে মেহরীন মা-বাবাকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘তাদের (বাবা-মা) মাধ্যমে আমি পৃথিবীতে এসেছি এটা আমার দোষ না। আমি তাদের পাপেট (পুতুল) নই। আমাকে কেন গালি দেবে? আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আমি খেতে পারি না, ঘুমাতে পারি না। আমাকে তারা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। ব্রেইন অ্যান্ড মাইন্ড হাসপাতালে আমাকে দুই বছর রাখা হয়। সেখানে আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। আমাকে কেন ওই হাসপাতালে রাখা হলো, জানতে চাই।’

এছাড়া, তার মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, গত ২৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসায় বাদী মেহরীন আহমেদকে তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ শারীরিকভাবে আঘাত করেন এবং গালি দেন। তাকে মেরে জখম করা হয়। বাদী একজন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও তারা তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, অপমান ও নির্যাতন করে যাচ্ছেন। তারা প্রতিনিয়ত পরিবারের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহারে বাধা দেন।

এতে আরও বলা হয়, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে যেসব সম্পদ বা সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের অধিকার রয়েছে, তা থেকে তাকে বঞ্চিত করে এবং বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়। তারা মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভীতি প্রদর্শন, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তারা শারীরিকভাবে তাকে আঘাত করেন। যার মাধ্যমে সহিংসতা ঘটেছে।

শুনানির পর আদালত পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।এ পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মেহেরীন ও তার মা-বাবা আদালতে হাজির হন। মেহেরীন এ সময় আদালতকে জানান, মা-বাবার সঙ্গে তার আপস হয়েছে। তিনি আর এই মামলা চালাতে ইচ্ছুক নন। পরে আদালত মামলাটি খারিজ করেন।

মেহেরীনের আইনজীবী সুমাইয়াদ শাহরিয়ার মামলা খারিজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আপসমূলে মামলা খারিজ করা হয়েছে।