
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে অর্থাৎ ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রতিনিধি দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেড় লাখ টন সার অমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইউরিয়া, টিএসপিসহ বিভিন্ন রকম সার রয়েছে। এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘২ লাখ ২০ হাজার টন গম আনার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনার যুক্তি হচ্ছে, আমরা একটু ডাইভার্সিফাই (বহুমুখী) করতে চাচ্ছি। অনেক সময় রাশিয়ান ব্লক কিংবা ইউক্রেন ব্লকে একটা অনিশ্চয়তা দেখা গেছে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের শুল্ক নিয়ে নেগোশিয়েশন (সমঝোতা আলোচনা) চলছে। এক্ষেত্রে আমদানি বাড়ানোর বিষয় রয়েছে। এ গম কেনার ফলে দর কষাকষিতে সহায়ক হবে।
দাম তুলনামূলক বেশি কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই দাম বেশি। তবে দাম একটু বেশি হলেও অন্যদিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যাবে। এই গমের প্রোটিনও কিছুটা বেশি। তবে খুব বেশি তা নয়। ইনপিওরিটি অনেক কম। সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের গমের মান ভালো।’
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রয়োগের আর ৮ দিন বাকি আছে, এর মধ্যে আর আলোচনা হবে? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী সপ্তাহেই অর্থাৎ ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে যাবেন। আমরা আশা করছি, শুল্ক হয়তো কিছু কমাবে। কারণ, আমাদের ঘাটতি তো খুবই কম। ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের মতো।’
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে লবিস্ট নিয়োগের দাবি জানানো হচ্ছে, এমন প্রশ্ন সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে লবিস্ট নিয়োগ কতটুকু কাজে লাগবে জানা নেই। তবে লম্বা সময় নিয়ে কোনো নেগোশিয়েশনের ক্ষেত্রে এই ধরনের লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে দ্রুত করতে হবে। এছাড়া বেসরকারি খাত সম্পৃক্ত করার কথা বলা হলেও প্রকৃত অর্থে ব্যবসায়ীদের সেখানে প্রবেশের সুযোগ নেই। দর কষাকষি তো দূরের কথা, ওরা ঢুকতেই পারবে না।’
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী চেম্বারের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ইউএস চেম্বার তাঁকে চিঠিও দিয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি, মেটলাইফের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ইমেজ ভালো।