
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ভারতীয় ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই শত শত জাতিগত বাঙালি মুসলিমকে বাংলাদেশে নির্বাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। পরিবর্তে নির্বিচারে আটক এবং বহিষ্কার থেকে রক্ষা করার জন্য পদ্ধতিগত সুরক্ষার সকলের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
মূলত গত এপ্রিলে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সশস্ত্র হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন গাইড নিহত হওয়ার পর, তথাকথিত 'অবৈধ বাংলাদেশিদের' বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়ন শুরু হয়। মূলত এরপর থেকে বিজেপি সরকার 'বহিরাগতদের' বহিষ্কারের কথা বলে আসছে। যার প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতজুড়ে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলে সন্দেহ করছে নয়াদিল্লি। তাদের অনেককে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করে সীমান্ত পার করে প্রতিবেশী মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে শত শত জাতিগত বাঙালি মুসলিমকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। দেশটির দাবি করেছে যে তারা "অবৈধ অভিবাসী"। তাদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির ভারতীয় নাগরিক। ২০২৫ সালের মে মাস থেকে, হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার জাতিগত বাঙালি মুসলিমদের বাংলাদেশে বহিষ্কারের অভিযান জোরদার করেছে, দৃশ্যত আইনি অনুমোদন ছাড়া ভারতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখার জন্য। সরকারের উচিত যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই অবৈধভাবে মানুষকে নির্বাসন বন্ধ করা এবং পরিবর্তে নির্বিচারে আটক এবং বহিষ্কার থেকে রক্ষা করার জন্য পদ্ধতিগত সুরক্ষার সকলের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা।
এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিল যে, তারা যেন সরকারি পদ্ধতি অনুসারে পরামর্শ এবং যাচাই-বাছাই ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে 'পুশ ইন' বন্ধ করে। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই চিঠিগুলোর কোনো উত্তর দেয়নি বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডার অংশ হিসেবে দেশের ২০ কোটি মুসলিমকে নির্যাতন, হয়রানি এবং ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে। যদিও বিজেপি সরকার এই অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে।