Image description

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের ফিউরেনাল প্যারেড ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখন চলছে দাফনের প্রস্তুতি। এর আগে তার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানসহ (ভারপ্রাপ্ত) উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা এবং নিহতের পরিবার সদস্যরা।

সূত্রের তথ্য, বগুড়া এয়ারবেজে বিমানযোগে নেওয়া হচ্ছে তৌকিরের লাশ। সেখানে থেকে বিশেষ গাড়িবহরে রাজশাহী নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। রাজশাহীর সপুরা ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নগরীর সপুরা গোরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।

মর্মান্তিক এ ঘটনায় তার প্রশিক্ষক মোস্তাক আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি তৌকিরের শিক্ষাজীবন ও তাদের শেষ আলাপনের স্মৃতিচারণ করেন। মোস্তাক আহমেদ জানান, তৌকির ছিল অত্যন্ত মেধাবী, মিশুক ও শান্ত স্বভাবের। তিনি বলেন, ‘তৌকির খুব মেধাবী ছিল। ভীষণ মিশুক ও শান্ত ছেলে ছিল। তার কথা এখন খুব মনে পড়ছে। সে ছোটদের স্নেহ ও বড়দের সম্মান করতে জানত।’

মোস্তাক আহমেদ আরও জানান, ‘আমি রাজশাহীর মানুষ সেও রাজশাহী ছাত্র। সেই হিসেবে আমি তাকে চিনি। মিডিয়ায় সংবাদ দেখার পরে আমি এসেছি। সে শিক্ষার্থী ভালো, মানুষ হিসেবে ভালো, পাইলট হিসেবেও ভালো ছিল।’ তৌকিরের পাইলট হওয়ার ইচ্ছা ছিল ছোটবেলা থেকেই। তার স্মার্টনেসের জন্য তিনি প্রশংসা করেন। প্রশিক্ষক মোস্তাক বলেন, ‘তৌকির নম্র, ভদ্র ও স্মার্ট। একজন দক্ষ মানুষ। তাকে ছোট থেকে দেখছি। তার এমন খবরে আমি নিজেও মর্মাহত। একমাস আগেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে বলেছিল- স্টাফ আমি আসতেছি, দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। এটাই ছিল তার সঙ্গে শেষ কথা।’

তৌকিরের শিক্ষা জীবন ছিল উজ্জ্বল। পাবনা ক্যাডেট কলেজের আগে তিনি রাজশাহী গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।

স্বজনেরা জানান, তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করেন। প্রায় ২৫ বছর আগে থেকেই তিনি রাজশাহীতে বসবাস করেন।

তৌকির রাজশাহীর নিউ গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনার পর পাবনা ক্যাডেট কলেজে ৩৪তম ব্যাচে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে তিনি ক্যাডেট কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। বছরখানেক আগে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। তৌকিরেরা দুই ভাই-বোন। ছোট বোন বৃষ্টি খাতুন রাজশাহীর বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় তৌকিরের মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের কানসার্ট ও রাজশাহীর বাড়িতে পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।