
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ও ভারত । দুর্ঘটনাটিতে অনেক শিশুসহ বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক প্রাণহানিতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই, বিশেষ করে নিহতদের পরিবার—যাদের অনেকেই ছিল অল্প বয়সি শিশু।
পাকিস্তান আরও জানায়, এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশের পাশে আছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আমাদের সংহতি অব্যাহত থাকবে।
বিমানটি কীভাবে স্কুল ভবনে আছড়ে পড়ল, তা তদন্তাধীন রয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী শোক প্রকাশ করা হচ্ছে এবং দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
সরকারের পক্ষ থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ঢাকার এ ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। এক্সে এক পোস্টে তিনি এই শোকবার্তা প্রকাশ করেন।
ইসহাক দার তার শোকবার্তায় লিখেছেন, ঢাকায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর বিমানবাহিনীর জেট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। এই দুঃখের মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার, এর নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি আমার গভীর সহানুভূতি রইল।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। আহতদের এরই মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দগ্ধ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। জ্বলন্ত উড়োজাহাজটির আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের অনেক ইউনিট।
এক ফেসবুক পোস্টে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের দপ্তর থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ঢাকায় একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত ও দুঃখবোধ করছি। নিহতদের অনেকেই ছিলেন তরুণ শিক্ষার্থী। পরিবারগুলোর জন্য আমাদের হৃদয় শোকাহত। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে এবং সম্ভাব্য সকল সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়াও বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।
বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এই দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ।
প্রধান উপদেষ্টা আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসহ সব কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ দেন।