
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের আসামী নান্নু কাজী, রিজওয়ান উদ্দিন ও তারেক রহমান রবিন প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বিকেলে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুজজামান এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আসামীদের আদালতে হাজির করেন। পরে তাদের জিজ্ঞেসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তিনি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনায় জড়িত থাকার স্বপক্ষে সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ঠিকানা শনাক্ত এবং মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনে তাদের রিমান্ডে নেয়া জরুরি।
এ সময় বিচারক আসামিদের উদ্দেশ্য বলেন, এভাবে একটি মানুষকে হত্যা করতে একবারে জন্য হৃদয় কাঁপলো না। এরপর তাদের নাম জিজ্ঞেস করে এবং সোহাগকে কেনো নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তা জানতে চান বিচারক।
জবাবে আসামী নান্নু কাজী বলেন, তিনি প্রবাসী। তবে মিটফোর্ডে তার ব্যবসা রয়েছে। অনেক আগে সোহাগের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়েছিল সেই কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে আসামী রিজওয়ান বলেন, তিনি ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাথে জড়িত। তাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত সোহাগকে দূর থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করেছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। অন্যদিকে আসামি তারেক রহমান রবিন আদালতকে বলেন, সোহাগকে আঘাত করেননি তিনি। দূরে থেকে দাঁড়িয়ে দেখেছেন। পরে শুনানি শেষে প্রত্যেক আসামীর সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- হত্যাকাণ্ডের হোতা নান্নু কাজী, রিজওয়ান উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান মহিন, টিটন গাজী, মো. আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, তারেক রহমান রবিন, সজীব ব্যাপারী ও তার ভাই রাজিব ব্যাপারী।
এদের মধ্যে গত ১০ জুলাই মহিন ও ১২ জুলাই টিটন গাজীর পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। পরে ১৩ জুলাই আলমগীর ও মনিরের চার দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়ে। গত ১৪ জুলাই সজীব ও রাজিবের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সবশেষ গত ১৬ জুলাই মাহমুদুল হাসান মহিনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এ হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে এ পর্যন্ত নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের গেটের কাছে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে থেতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর নিথর লাশ টেনে সড়কের মাঝে নিয়ে আসেন হত্যাকারীরা। সেখানে লাশের উপর লাফিয়ে উঠে উল্লাস প্রকাশ করেন ঘাতকেরা। এ ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।