Image description
সরকারের করা একটি আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মকর্তাদের সামাজিকভাবে হয়রানি করা অন্যায়

ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়েছেন বিসিএসের চারটি ব্যাচের কর্মকর্তারা। এক যুগের বেশি সময় সরকারি চাকরি করে এখন মিথ্যা তথ্য আর গুজবের কারণে সামাজিকভাবে সম্মানহানিতে পড়েছেন বিসিএস ২৮, ২৯, ৩০ এবং ৩১-এর শতাধিক কর্মকর্তা। এ চারটি ব্যাচে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পাওয়াদের বাছাই করে মুখরোচক গল্প ছড়ানো হচ্ছে। বিসিএসে নিয়োগ পেয়ে দায়িত্বপালন করা কর্মকর্তাদের নিয়ে এমন গুজবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পিএসসি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিব্রত। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে খোলাসা করছে না কোনো প্রতিষ্ঠান। তদন্ত ছাড়াই মিথ্যাচারকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মকর্তাদের রদবদল করেছে খোদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অনেকের পদোন্নতিও আটকে যাচ্ছে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের করা একটি আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মকর্তাদের সামাজিকভাবে হয়রানি করা অন্যায়। সরকারের আইন নিয়ে মিথ্যাচার ও প্রশ্ন তোলা অবান্তর। সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো বিষয়টি ক্লিয়ার করতে পারে।

জানা গেছে, ১৯৮২ সিভিল সার্ভিস রুলস রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিধি ২০১২ সালে সংশোধিত হয়। সংশোধিত হয়ে বিধি ১৬-এ সংযোজন করা হয়। যা ২৮ বিসিএস থেকে কার্যকর করা হয়। সেই সংযোজন করা আইনে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যপরীক্ষার অনুপস্থিতিজনিত শূন্য পদে শুধু মুক্তিযোদ্ধা সন্তান যারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এমন প্রার্থীদের মেধার ক্রমানুসারে নিয়োগ দেওয়া হবে।’ সরকারের ওই আইনে ২৮ বিসিএসে চারজন, ২৯ বিসিএসে ৩১ জন, ৩০ এবং ৩১ বিসিএসে ৪০ জন প্রশাসন, পুলিশ, ট্যাক্স, তথ্যসহ বিভিন্ন ক্যাডারে পিএসসির সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এক যুগের বেশি চাকরি করার পর সম্প্রতি ওই আইনে নিয়োগ পাওয়া প্রায় শতাধিক কর্মকর্তার নামে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। ‘ভুয়া ক্যাডার’, ‘নন ক্যাডার থেকে নিয়োগ পেয়েছেন’ এমন গুজব রটানো হয়। অন্তত ১৫ জনের বেশি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিথ্যা তথ্য ছড়ানোতে তারা সামাজিকভাবে হেয় হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়া অপরাধ ছিল কি না সে প্রশ্নও রেখেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা। তারা বলেন, সরকার কোন আইনে নিয়োগ দিয়েছে প্রার্থী হিসেবে আমাদের জানার বিষয় নয়। চাকরিতে ডেকেছে আমরা যোগদান করেছি। এত বছর পর মিথ্যা তথ্যের ওপর আমাদের সম্মানহানি করা হচ্ছে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, যে কোনো সরকার যে কোনো সময় চাইলে আইন সংশোধন করতে পারে। আইন নিয়ে মিথ্যাচার করা অবান্তর। আইন রহিত করলেও ওই আইনে আগের সব কার্যক্রম বৈধতা পায়। এ আইনটি তো এখনো বহাল আছে। ঢালাওভাবে কাউকে বা কোনো ব্যাচকে হেয় করা সমীচীন নয়।