
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছেলেদের হলগুলো সারারাত খোলা থাকলেও ছাত্রী হলগুলোতে রয়েছে সময়সীমা। সাধারণত রাত ১০টার পর মেইন গেট বন্ধ হয়ে যায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে পরিচয়পত্র জমা দিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত হলে প্রবেশের সুযোগ পান আবাসিক ছাত্রীদের কেউ কেউ।
কিন্তু গতকাল সোমবার (১৪ জুলাই) ছিল ব্যতিক্রম। এক বছর আগে, ঠিক এই দিনে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে হলের ফটক ভেঙে আন্দোলনে নামেন নারী শিক্ষার্থীরা। ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় ঢাবি এলাকা। সেই রাত থেকেই মোড় ঘোরে রাজনৈতিক পরিস্থিতির। এরপর ঘটনার ধারাবাহিকতায় পতন ঘটে হাসিনা সরকারের।
তাদের সেই বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ স্মরণ করে ঢাবিতে উদযাপিত হলো ‘জুলাই উইমেন্স ডে’। এ উপলক্ষে সোমবার সারারাত খোলা রাখা হয় ঢাবির ছাত্রী হলগুলোর গেট। উৎসবমুখর পরিবেশে নারী শিক্ষার্থীদের ছিল অবাধ চলাফেরা ও অংশগ্রহণ।
রাত ১২টায় হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে আবারও একত্রিত হন ঢাবির নারী শিক্ষার্থীরা। সেখানে প্রতিধ্বনিত হয় আগের বছরের সেই প্রতিবাদী স্লোগান: ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’।
নারী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে প্রোগ্রামে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।
সেখানে উপস্থিত এক শিক্ষার্থীর লেখা একটি প্ল্যাকার্ড নজরে আসে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদের। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘সারা বছর গেট খোলা রাখতে কয়টা অভ্যুত্থান লাগবে’।
ওই প্ল্যাকার্ড দেখে প্রক্টর বলেন, ‘একটা প্ল্যাকার্ডে হল গেট খোলা রাখা চাই লেখা দেখছি। সেটা আমরাও চাই। একদিন হবে ইনশাল্লাহ। কিন্তু এখন সম্ভব না।'
এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারী শিক্ষার্থীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৪ জুলাই পালিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নারী শিক্ষার্থী দিবস। এটিকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস মোকাবিলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, সেটির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭ জুলাই সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস পালন হবে। এটিও অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’