Image description
 

দীর্ঘদিন সংস্কারহীন তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধের অসংখ্য পয়েন্ট এখন ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে। কারণ ছয় বছরেও সংস্কার হয়নি এ বাঁধ। যেখানে ২০১৯ সালে একবারই হয়েছিল আংশিক সংস্কার।

 

 

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ওই বছর তিস্তা ডানতীর বাঁধ সংস্কারে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১২৬ কোটি টাকা। কিন্তু সেই বিপুল অর্থে ঠিক কী কাজ হয়েছে, তার দৃশ্যমান প্রমাণ মেলে না তিস্তা পাড়ে। অনেক জায়গায় বাঁধের মাটি আলগা, কোথাও গাছপালা গজিয়ে উঠেছে, কোথাও বাঁধ নেই বললেই চলে।

 

চার দশক আগে তৈরি বাঁধটির ৬৭ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ৪৫ কিলোমিটার অংশ এখন কার্যত অরক্ষিত। কোথাও বাঁধের প্রস্থ ১৪ ফুট থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ ফুটে। কোথাও আবার বৃষ্টির পানিতে বাঁধের অস্তিত্বই নেই বলেই চলে । অথচ এর মাঝেই কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ এসেছে, হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা।

 

গঙ্গাচড়ার ধামুর এলাকার দিনমজুর শহর আলী দাঁড়িয়ে আছেন নদীঘেঁষা ভাঙা বাঁধের পাশে। আঙুল উঁচিয়ে বলেন, এইডা কি বাঁধ? এইডা ত ভাঙনের রাস্তাই! বছর যায়, বরাদ্দের খবর শুনি। কিন্তু আমাদের রক্ষা করে কে?

 

কোলকোন্দের নওশের আলী বলেন, কিছু জায়গা কাজ হয়েছে, যেসব জায়গায় কাজ হয়েছে সে জায়গাগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। কারণ বাঁধের নিচ থেকে মাটি কেটে বাঁধের উপরে দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে সে মাটি ধুয়ে আবার সে জায়গা চলে গেছে।

 

মনছুর আলী বলেন, ভয়ে থাকি প্রতি বছর। কখন যেন পানি বাড়ে। শুধু বরাদ্দ শুনি কিন্তু কেউ আসে না দেখে আমাদের চোখের জল।

 

শুধু শহর আলী নন, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, নোহালী, গান্নারপারসহ একাধিক ইউনিয়নের শত শত বাসিন্দা এখন আশ্রয়কেন্দ্রে আগেই খুঁজছেন আশ্রয়ের পথ।

 

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, শুধু গ্রাম নয়, বাঁধ ভেঙে গেলে রংপুর শহরের আশপাশও হুমকিতে পড়বে। সময়ের আগেই পদক্ষেপ না নিলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।

 

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের বেশিরভাগ অংশই জেলা থেকে আসে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা বা অবগত না করে নিজের মতো করে করা হয়। তারা এখানে এসে বাঁধ সংস্কার করে চলে যায় কিন্তু আমাদের জানায় না কাজ কোথায় কতটুকু হয়েছে কিংবা কি ঝুঁকি আছে।

 

রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা নতুন বরাদ্দ চেয়েছি। বেশ কিছু পয়েন্ট এখন চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।