Image description

গাইবান্ধার তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে বাড়িঘর হারানোর আতঙ্কে দিন পার করছে নদী পাড়ের মানুষজন। ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছেন তারা।

 

জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের খোলাবাড়ি এলাকার ননী গোপালের স্ত্রী কণিকা রানী। ৪ ছেলে-মেয়েসহ ৫ জনের সংসার। এক সময় সব থাকলেও দফায় দফায় নদী ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব এখন তার পরিবার। প্রায় ৫ বছর আগে আশ্রয় নিয়েছেন খোলাবড়ি এলাকায়। কিন্তু সেখানেও ৩ দফা ভাঙনের শিকার হয়েছেন। আবারও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন তিনি। নদী চলে এসেছে একদম ঘরের কোণায়।


কণিকা রানী জানান, নদী ভাঙনে সব হারিয়ে নিজের জায়গা না থাকায় ধার-দেনা ও সুদের ওপর টাকা নিয়ে মাথাগোঁজার জায়গাটুকু কিনেছেন তিনি। এখন সে জায়গাটিও নদী গর্ভে চলে যেতে বসেছে।

কণিকা রানীর মতো এখন একই অবস্থা ওই এলাকার ৩ শতাধিক পরিবারের। অল্প দিনের ব্যবধানে নদী গর্ভে চলে গেছে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও আবাদি জমি।

ব্রহ্মপুত্র নদের ফুলছড়ি উপজেলার পূর্ব কঞ্চিপাড়া, কটিয়ারভিটা, উত্তর উড়িয়া, কালাসোনা, জোড়াবাড়ি, গজারিয়া, সদরের মোল্লারচর, তিস্তা নদীর সুন্দরগঞ্জের কাপাশিয়া, লালচামার, কারেন্টবাজার ও পুটিমাড়িসহ প্রায় ২০টি এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। হুমকির মুখে পড়েছে এসব এলাকার স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ হাজারও বাড়িঘর এবং আবাদি জমিসহ ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ক্রসবাঁধ সংলগ্ন দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার।

প্রতিদিন ভাঙছে এসব এলাকার আবাদি জমি ও বসতভিটা। অব্যাহত নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙন কবলিত এসব এলাকার মানুষ।

দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থাসহ স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি নদী পাড়ের এসব মানুষের।

ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, গত একমাসের ব্যবধানে কয়েকশত বিঘা ২ ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫ শতাধিক পরিবারের বসত ভিটা।

একই উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের কটিয়ারভিটা গ্রামের রিপণ মিয়া জানান, উত্তর উড়িয়া থেকে কটিয়ারভিটা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় এক মাস থেকে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদসহ কয়েক শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যাবে।

ভাঙনের কথা স্বীকার করে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে স্থায়ী প্রতিরোধ প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।