Image description

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ন্যায়বিচারের ইঙ্গিত না পেলে শাহবাগ ব্লকেডের হুমকি দিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। একই দাবি নিয়ে আজ বুধবার রাতে তাঁরা শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার মধ্যে ন্যায়বিচারের ইঙ্গিত না পেলে শাহবাগ ব্লকেড করার হুমকি দেন আন্দোলনকারীরা।

আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার আন্দোলনকারীদের পক্ষে এই ঘোষণা দেন।

মাহিন সরকার বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে শুনতে চেয়েছিলাম আর যেন শুনানি পেছানো না হয়। ৫ আগস্টের পর অনেকবার শুনানি পেছানো হয়েছে। এর পাশাপাশি শহীদ মিনারে বিচারের দাবিসহ বেশ কয়েক দফা ঘোষণা করেছি। কিন্তু এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সাড়া দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি ন্যায়বিচারের কোনো ইঙ্গিত না দেখি, আবার আগামীকাল বৃহস্পতিবার শাহবাগ ব্লকেড করা হবে। রাতে আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব এবং যদি আমরা ন্যায়বিচারের ইঙ্গিত না পাই, কোর্ট ও সরকারের কাছ থেকে অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট না পাই, তাহলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব। সেটি হবে শাহবাগ ব্লকেড’।

এর আগে মাহিন সরকারের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় যান। প্রতিনিধিদলে ছিলেন নাজমুল, মাহবুব, শাকিল, কাজল, মঞ্জুর, খোরশেদ, রিমি, কানিজসহ নয়জন। এতে তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ও ছয়জন বিডিআর ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অনেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, অনেকে নিরপরাধ হয়ে জেলে আছেন। জেল থেকে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া মো. জামালুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিডিআরের ঘটনার সময় বান্দরবানের ট্রেনিং সেন্টারে ছিলাম। কিন্তু তারপরও আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়’।

তিনি আরও বলেন, ‘বিডিআর হত্যার তদন্তে যেই স্বাধীন তদন্ত কমিশন করা হয়েছে, তারা আগের রায় বহাল রেখে কী কাজ করবে। এতে আমাদের কোনো লাভ হবে না।’

আন্দোলনের সমন্বয়ক রোকশাদ আলম প্রধান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলে থাকা নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নিঃশর্ত মুক্তি, চাকরিচ্যুত বিডিআর কর্মকর্তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া ও অসহায় পরিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না’।

উল্লেখ্য, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃ তদন্তের দাবিতে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্য ও ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে আজ বেলা ১১টার সময় থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। পরে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে শাহবাগ এলে আটকে দেয় পুলিশ। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যস্থতায় একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যায়। বাকিরা শাহবাগে অবস্থান নেন। ফলে শাহবাগ থেকে টিএসসি পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, আশপাশের সড়কেও যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। বিকেল ৫টার সময় প্রতিনিধিদল ফিরে এলে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয় এবং শাহবাগ থেকে চলে যায়।