
মার্কিন শুল্কে ভিয়েতনাম কিছুটা সুবিধা পেলেও কম খরচে উৎপাদনে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। একইভাবে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী দেশ চীন, ভারত থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ বাড়ালে গুনতে হবে বাড়তি দাম। কারণ, সেসব দেশের সর্বনিম্ন মজুরি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। এমন হিসাব কষে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মার্কিনরা সাশ্রয়ী মূল্যে পোশাক চাইলে বিকল্প নেই বাংলাদেশের।
আবারও বৈঠকে বসার আশ্বাসে মত-দ্বিমতে শনিবার (১২ জুলাই) শেষ হয় বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা। এরপরই সামনে আসে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে মার্কিন বাজারে কী টিকে থাকতে পারবে বাংলাদেশ?
প্রথমেই আসা যাক, তৈরি পোশাক শিল্পে। গেল বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা ৮৪০ কোটি ডলার আয়ের মধ্যে ৭৪০ কোটিই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। বাজারটিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী দেশি চীন-ভিয়েতনাম। এরপর রয়েছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান সময় সংবাদকে বলেন,
ভারত এবং চীনের রেট ৩০ শতাংশের বেশি হলে আমাদের জন্য বেশি ভয়ের কারণ নেই। কারণ আমাদের খরচ বেশি হলেও কিছু কিছু খরচ কম। সব মিলিয়ে আমরা একটা প্রতিযোগিতামূলক জায়গায় থাকবো। কিন্তু চীন ও ভারত আমাদের চেয়ে ৫ বা ১০ শতাংশ সুবিধা বেশি পেয়ে গেলে সেটা আমাদের জন্য একটা দুশ্চিন্তার কারণ হবে।
তথ্য বিশ্লেষণ বলছে, ২০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও উৎপাদন খরচে পিছিয়ে রয়েছে ভিয়েতনাম। কারণ বাংলাদেশে যেখানে সর্বনিম্ন মাসিক মজুরি ১১৩ ডলার, সেখানে ভিয়েতনামে অঞ্চলভেদে রয়েছে ১৪০ থেকে ২০০ ডলার। একইভাবে ভারতের শুল্ক ২৬ শতাংশ হলেও মজুরি রয়েছে ১৪৮ থেকে ১৮২ ডলার। চীনা পণ্যে শুল্ক যেমন বাংলাদেশের চেয়ে বেশি, তেমনি দেশটিতে সর্বনিম্ন মজুরি ২২৫ থেকে ৩৬০ ডলার।
এ অবস্থায় অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যতটা সস্তা দামে বাংলাদেশি পোশাক পায় যুক্তরাষ্ট্র, এই মানের পোশাক এর চেয়ে কমে পাবে না আর কোনো দেশে। তাই শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে থাকার পরামর্শ তাদের।
এদিকে ব্রিকসের সদস্য হওয়ায় ভারত ও চীনে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।