Image description

আপনি কি জানেন, আপনার নামে কয়টি সিম নিবন্ধন করা আছে? অনেকেই হয়তো জানেন না। অথচ এটি জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, আপনার অজান্তেই কেউ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশন করে ফেলতে পারে। পরে সেই সিম কোনো অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হলে আপনিই পড়বেন বিপাকে। 

 

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ঘোষণা দিয়েছে, একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি সিম ব্যবহার করতে পারবেন। নতুন এই সীমা আগামী ১৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এর আগে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু সিম জালিয়াতি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় বিটিআরসি এই সীমা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে মোবাইল ফোনে কল, বার্তা কিংবা ইন্টারনেট সব ক্ষেত্রেই সিম কার্ড অপরিহার্য। আর এই সিমের নিবন্ধন বাধ্যতামূলকভাবে এনআইডি দিয়ে করতে হয়।

আপনি চাইলে খুব সহজেই জানতে পারবেন আপনার এনআইডি দিয়ে কয়টি সিম নিবন্ধিত রয়েছে। এজন্য প্রয়োজন শুধু একটি মোবাইল ফোন ও এনআইডির শেষ চারটি সংখ্যা। 

প্রথমে যে কোনো অপারেটর (গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক বা টেলিটক) থেকে ফোনের ডায়াল মেনুতে গিয়ে *১৬০০১# লিখে ডায়াল করতে হবে। এরপর ফিরতি মেসেজে জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা চাওয়া হবে। সেই সংখ্যা পাঠানোর পর ফিরতি এসএমএসে জানিয়ে দেয়া হবে, আপনার নামে কয়টি সিম নিবন্ধিত রয়েছে এবং কোন কোন অপারেটরের সিম রয়েছে। তবে এখানে নম্বরগুলোর পুরোটা দেখা যাবে না, শুধু শুরু ও শেষের তিন ডিজিট দেখানো হবে।

তবে যেকোনো মোবাইল নম্বর দিয়ে সে নম্বরটি কোন আইডিতে নিবন্ধন করা, সেটি এখনো জানা সম্ভব নয়। বিটিআরসির নিরাপত্তাবিষয়ক নীতিমালার কারণে এই তথ্য কেবল মোবাইল অপারেটর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সংরক্ষিত।

আপনার নামে নিবন্ধিত, কিন্তু আপনি যেসব সিম ব্যবহার করছেন না সেগুলো বাতিল করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাদের নামে ১০টির বেশি সিম রয়েছে, তাদের একটি তালিকা মোবাইল অপারেটরদের কাছে পাঠাবে বিটিআরসি। অপারেটররা এসব গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাইবে, তারা কোন ১০টি সিম রাখতে চান। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে যেসব সিম থেকে বেশি কল বা ডেটা ব্যবহার হচ্ছে এবং যেগুলো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি)-এর সঙ্গে যুক্ত।

২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ কোটি ৬২ লাখ সক্রিয় সিম রয়েছে। এর বিপরীতে প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখের মতো। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ গ্রাহকের নামে রয়েছে ৫টি বা কম সিম। ৬ থেকে ১০টি সিম রয়েছে ১৬ শতাংশের মতো গ্রাহকের নামে এবং ১১ থেকে ১৫টি সিম রয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের কাছাকাছি গ্রাহকের নামে।

তাই সিমের অপব্যবহার কিংবা জালিয়াতির ফাঁদে পড়ার আগেই নিজের নামে কয়টি সিম রয়েছে তা জেনে নিন। নিয়মিত যাচাই করুন এবং অপ্রয়োজনীয় সিম বাতিল করে নিজের পরিচয় নিরাপদ রাখুন।