Image description
 

সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লোহার জং ধরা নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রেখেছে প্রকৃতি। তাইতো লতানো বিরুৎ আর পাখিরা খুঁজছে নিজেদের জায়গা। জানান দিচ্ছে দিনের পর দিন পড়ে আছে নির্মাণ কাজ।

 
প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার লেভেল ক্রসিং এলাকার মানুষ মাশুল দিচ্ছেন অসম্পূর্ণ কাজের। স্থানীয়রা বলছেন, কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। আদৌ কাজ শেষ হবে কি না, সন্দেহ হচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে আশীর্বাদ মনে হলেও এটি এখন অভিশাপ মনে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর মশার কারণে রাস্তায় থাকা যায় না। দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
 
 
বলি হচ্ছে প্রাণ-প্রকৃতিও। যার প্রমাণ হাতিরঝিলের হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পেছনের অংশ। দুর্গন্ধ আর দূষণে এসব এলাকায় বেড়েছে মশার উপদ্রবও। এমনকি মগবাজার লেভেল ক্রসিং থেকে কুতুবখালী অংশের তৃতীয় ধাপের শুরু হওয়া কাজ দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় অভিযোগ আছে সেখান থেকে চুরি হয়েছে নির্মাণসামগ্রীও। স্থানীয়রা জানান, পাইলিং ও কয়েকটি পিলারের কাজ হয়েছে। প্রকল্পের আশপাশে টিন দিয়ে বেড়া দেয়া থাকলেও সেগুলো খুলে নিয়ে গেছেন অনেকে।
 
চলতি বছরের জুনের মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে সেই কাজ যে শিগগিরই শেষ হচ্ছে না, তা এখন দৃশ্যমান। আর এ ধরনের প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে গেলে, বেড়ে যায় খরচও।
 
প্রকল্পের বাজেটের সঙ্গে এমন সময়ক্ষেপণ চাপ বাড়ায় জনগণের ওপরও, তাই দ্রুত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাদ সাধছেন যারা, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা জরুরি বলে মত বিশ্লেষকদের। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেন, প্রকল্প পরিচালকের ক্ষমতায়নে জোর দিতে হবে। প্রকল্প শুরু হওয়ার পর কোনো ধরনের অপচয় ও সময়ক্ষেপণ যাতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। কোনো প্রকল্পে সময়ক্ষেপণ বা অপচয় হলে যার অবহেলা বা খামখেয়ালিতে এটি হয়েছে, তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
 
 
যদিও এরইমধ্যে প্রশাসনিক জটিলতাগুলো দূর হয়েছে, শুরু হয়েছে নতুন করে কর্মী নিয়োগও। আসছে বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এমনকি পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে পান্থকুঞ্জ অংশের জটিলতা নিরসনের আশ্বাস বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফের।
 
তিনি বলেন, ‘সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এখন পর্যন্ত কাজে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি শেষ করতে পারব।’
 
দীর্ঘ এক যুগ আগে শুরু হওয়া এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ সুফল এখনও পাচ্ছেন না ঢাকাবাসী। তাইতো নতুন এই প্রতিশ্রুতি কতটা সময়মতো বাস্তবায়িত হবে, সেটিই এখন নগরবাসীর বড় প্রশ্ন।