Image description

সময় সংবাদে খবর প্রচারের পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলিম। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে মামলা না নিয়ে থানায় আটকে রেখে উল্টো নিজেই চাঁদা নেন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রচার হলে এবার ওসি আলিমের হুমকিতে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সময় সংবাদে গত ২ জুন নিজের বিরুদ্ধে সংবাদ দেখে একদিন পরই অভিযোগকারীদের শায়েস্তা করতে হাজির হন ওসি আলিম। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পরে সেই দৃশ্য।

 
শুধু ৪ জুনই নয়, মোট তিন দফা নির্মাণাধীন ওইসব ভবনে গিয়ে সবাইকে শাসিয়ে আসেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি আলিম। সেই ঘটনার পর থেকে ওসি আলিমের বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছিলেন তারা এলাকাছাড়া, বন্ধ হয়ে গেছে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর সব ধরণের কাজ।
 
এর আগে চাঁদা না পাওয়ায় ১৩ মে পুলিশের উপস্থিতিতেই একদল যুবক হানা দেয় একটি নির্মাণাধীন ভবনে। পুরো ঘটনাটি ঘটে ক্যান্টমেন্ট থানার পুলিশ সদস্যদের সামনে।
 
ভুক্তভোগীরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে মারধরের পর উল্টো ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আসে ওসি আলিমের বিরুদ্ধে।
 
 
ভুক্তভোগীরা সেই সময় অভিযোগ করেন, ওসির নির্লিপ্ততার সুযোগে চাঁদাবাজরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে ইসিবি-মানিকদী এলাকায়। এসব নিয়ে পুলিশ সদর দফতরসহ সবকারি ও বেসরকারি বেশ কয়েকটি সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
 
এসব নিয়েই সংবাদ প্রচারিত হয় ২ জুন। সংবাদ প্রচারের পর এখন খোঁজ মিলছে না ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া শাহাজাদা নামের এক ব্যক্তির। আসাদ নামের অপর এক অভিযোগকারী অজ্ঞাতস্থান থেকে মোবাইলে জানান, ওই এলাকায় আর ফিরবেন না তিনি।
 
এখানেই শেষ নয়, ইসিবি এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা চেয়ে না পেয়ে তাকেও হয়রানি করেন ওসি আলিম। ওই ভুক্তভোগী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 

অর্থনৈতিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় ছিলাম। তখন ওসির অনৈতিক আবদারগুলো রাখতে পারিনি। তার ওই আবদারগুলো রাখতে না পারায় তিনি আমাকে আওয়ামী দোসর ট্যাগ লাগিয়ে ছাত্র-জনতার মামলা দেয়া শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরেই আমি নির্যাতনের শিকার। তার বার বার হয়রানির কারণে আমি বাসায় থাকতে পারছি না।    

এসব বিষয়ে জানতে কয়েকদিন দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি ওসি আলিমের। মোবাইলে মেসেজ ও কল করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। সব শুনে ঢাকা মহানগর পুলিশর (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলছেন, অভিযোগের সত্যতা মিললে ব্যবস্থা নেবেন তারা।
 
 
তিনি বলেন, 

কারও বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক বা মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অবকাশ নেই। কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা তোলা, থানায় যথাযথ সময় না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে ওসি আলিমের বিরুদ্ধে। আইন রক্ষা যার কাজ প্রতি পদে পদে সেই ক‍্যান্টরমেন্ট থানার ওসি করছেন বেআইনি কাজ। দুর্নীতি ও অসংগতির পাশাপাশি এবার তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই দিচ্ছেন প্রাণ নাশের হুমকি। রক্ষকই যখন ভক্ষক হয়, তখন কার কাছে ন্যায়বিচার চাইবে এই এলাকার সাধারণ জনগণ, এমন প্রশ্ন এখানকার সর্বসাধারণের।