Image description
 

মারা গেছেন শেষ ঠিকানার নিপুণ কারিগর খ্যাত কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সেই মো. মনু মিয়া (৬৭)। জীবদ্দশার ৪৯ বছরে প্রায় ৩ হাজার ৫৭টি গোর খুদেছেন তিনি। এবার তার মৃত্যুর পর ৬ ব্যক্তি মিলে খুঁড়েছেন তার গোর অর্থাৎ কবর।শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মনু মিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর মনু মিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, মনু মিয়া জীবদ্দশায় প্রায় ৫০ বছর ধরে তিনি কবর খননের মহান কাজ করেছেন। কখনো বিনিময়ে কিছু নেননি। এমনকি মৃতের বাড়িতে এক গ্লাস পানিও তিনি খেতেন না। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কবর খুঁড়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি মানুষের। একটি ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে, এই কাজের জন্যই তিনি একসময় দোকান বিক্রি করে কিনেছিলেন প্রিয় ঘোড়াটি। বয়সের ভারে বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থতায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ঢাকার একটি হাসপাতালে গত ১৪ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন মনু মিয়া। এই অসুস্থতার মাঝেই মনু মিয়ার একমাত্র সঙ্গী ঘোড়াটিকেও মেরে ফেলে দুর্বৃত্তরা। গত ২৫ জুন চিকিৎসা শেষে তিনি গ্রামের বাড়িতে যান এবং আজ সকালে তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।

মনু মিয়ার কবর খুঁড়েছেন যারা তারা হলেন- জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামের সবর আলীর ছেলে মো. রমজান (৬০), করিম মোল্লার ছেলে নিয়ামল মোল্লা (৩০), মৃত্যু তাজুল ইসলামের ছেলে মো. রওশন চৌধুরী (৩৫), তাজুল ইসলাম খানের ছেলে মারুফ খান সোজাত (৩০), সুরুজ মিয়ার ছেলে অপু (৩২) ও ছামেদ মিয়ার ছেলে মো. কাছু মিয়া।এদিকে বিকেল সাড়ে ৫টায় মনু মিয়ার নিজ গ্রামের কবরস্থানের পাশে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর নিজ এলাকার আলগা পাড়া কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।