Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অনেক লাশের ময়নাতদন্ত না হওয়ার দায় আসামিপক্ষের বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা বিচার করতে যেয়ে যদি মুগ্ধের পোস্টমর্টেম খোঁজেন, আর না পান, তখন যদি বলেন–পোস্টমর্টেম নেই সুতরাং আসামি বেনিফিট পাবে। আমাদের নিবেদন থাকবে, আপনারা সারকামসটেন্সিয়াল এভিডেন্সকে (পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য) গুরুত্ব দিন। ন্যায়বিচার করতে গেলে আপনাদের বিবেক প্রয়োগ করবেন। জুলাই বিপ্লবে কেন পোস্টমর্টেম হয়নি—এই দায় বর্তাবে আসামিপক্ষের ওপর।’

রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বিচার বিভাগীয় জাতীয় সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রোববার এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলায় কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা নতুন জুরিসপ্রুডেন্স তৈরি করুন। জুরিসপ্রুডেন্সের নতুন দিক উন্মোচন করুন। জুলাই বিপ্লবে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছে। যাদের অনেকের পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) রিপোর্ট করা হয়নি। আপনারা যখন বিচার করবেন, সাধারণ মামলায় পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখতে চান। আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে মুগ্ধ। হাসপাতালে যখন মুগ্ধের লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তখন ডাক্তার তাকে ধরে দেখতে চাননি। মুগ্ধের লাশের পোস্টমর্টেম হয়নি। এরকম শত শত, হাজার লাশের পোস্টমর্টেম জুলাই বিপ্লবে হয়নি।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আপনারা বিচার করতে যেয়ে যদি মুগ্ধের পোস্টমর্টেম খোঁজেন, আর না পান, তখন যদি বলেন–পোস্টমর্টেম নেই সুতরাং আসামি বেনিফিট পাবে। আমাদের নিবেদন থাকবে, আপনারা সারকামসটেন্সিয়াল এভিডেন্সকে (পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য) গুরুত্ব দিন। ন্যায়বিচার করতে গেলে আপনাদের বিবেক প্রয়োগ করবেন। জুলাই বিপ্লবে কেন পোস্টমর্টেম হয়নি—এই দায় বর্তাবে আসামিপক্ষের ওপর। এটা নিবেদন আপনাদের কাছে।’ এক্ষেত্রে মকিম গাজীর মামলার উদাহারণ দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগে আর্থিক দুর্নীতি ব্যক্তি টু ব্যক্তি ক্যান্সারের মতো হয়েছে। কিন্তু ইনটেলেকচ্যুয়াল (বুদ্ধিবৃত্তিক) দুর্নীতি হয়েছে অ্যাটম বোমার মতো। যেসব বিচারকেরা ইনটেলেকচ্যুয়াল দুর্নীতির মাধ্যমে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে—আমি সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার পক্ষে মত দিচ্ছি। যাতে বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিজমের জন্ম না হয়। যাতে আর গুম–খুনের রাজনীতি চালু না হয়। বিচারবহির্ভুতভাবে মানুষ হত্যার সংস্কৃতি চালু না হয়।