
টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজের পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের নামে দেশব্যাপী একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়—বাদ যায়নি সরকারি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ক্ষমতা নেওয়া অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের নাম সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এর অংশ হিসেবে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৭টি হল ও ভবনের নামকরণে পরিবর্তন এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে শেখ মুজিবের পরিবার, আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের সংশ্লিষ্টদের নাম সরানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে এসব হল ও ভবনের নতুন নাম।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এসব হল ও ভবনের নতুন নামকরণের সুপারিশ অনুমোদিত হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, এর আগে গুগল ফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নামের প্রস্তাব গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে গঠিত নামকরণ কমিটি বিভিন্ন শহীদ ও বিশিষ্ট জনের নামে নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করে। পরে ৫৯তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এসব সুপারিশ অনুমোদিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বিজয় ২৪ হল, তাজউদ্দীন আহমেদ হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদ আবরার ফাহাদ হল, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদ নূর হোসেন হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেগম রোকেয়া হল, আইভি রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় নবাব ফয়জুন্নেছা হল, ড. এম. ওয়াজেদ মিয়া ভবনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভবন এবং শেখ সায়েরা খাতুন হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেগম খালেদা জিয়া হল (প্রস্তাবিত)।
অফিস আদেশে বলা হয়, এ নামকরণের ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সম্মতি সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
‘‘নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত আদেশটি সংশ্লিষ্ট সকল দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’