Image description

পরিবর্তিত এই সময়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে সরকার। নিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন ব্যয় আর মূল্যস্ফীতির উত্তাপ কমাতে দেয়া হয়েছে গুরুত্ব।

প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চারভাগের কিছুটা কম। ঘাটতি অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ উৎসের দিকেই ঝুঁকেছে অন্তবর্তী সরকার।

এক্ষেত্রে ব্যাংক খাত থেকে নেয়া হবে বড় অঙ্কের ঋণ। প্রশ্ন হচ্ছে ঘাটতি অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ উৎস নির্ভরতা কতটা টেকশই পন্থা?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর বাজেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক ড. আবু ইউসুফ বলেন, ফিসকাল স্পেসটা বাড়াতে হবে। এটি বাড়ানোর জন্য যেই ধরনের সংস্কার দরকার, সেই উদ্যোগ যদি না নিতে পারি আমাদের এ রকম ঘাটতি হবে। ঘাটতির রিফ্লেকশনটা আমরা যদি ব্যাংক বরোইং নেই, সেখানে একটা ক্রাউডিং আউট ইফেক্ট হবে। সেখানে বেসরকারি খাতের টাকা, তারল্যের যে বিষয়টা আছে, তাতে একটা সংকট হবে।

এবারের বাজেটে বিদেশি উৎস থেকে অর্থায়নের পরিকল্পনা করছে সরকার। এক্ষেত্রে লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থায় অর্থ সহায়তা ও ঋণ প্রাপ্তির সম্ভাবনা কতটুকু?

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি খুব সহজ হবে না। হয়তো প্রত্যাশা অনুযায়ী পাওয়াটিও দূরহ হবে। যদি সেটি হয় তাহলে হয়তো অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপরে নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে।

এদিকে, সরকারের ঋণ এখন ১৯ লাখ কোটি টাকার বেশি। তার মধ্যে দেশীয় উৎস থেকেই নেয়া হয়েছে বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে সুদ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।

ড. আবু ইউসুফ বললেন, ১৪ শতাংশ হচ্ছে আমাদের শুধু ইন্টারেস্ট পেমেন্ট, যেটা আমাদের শিক্ষা ও প্রযুক্তি মিলে যে বাজেটটা তার সমপরিমাণ। তো এই জায়গা থেকে যদি আমাদের বের হয়ে আসতে হয় তাহলে আমাদের ফিসকাল স্পেস বাড়ানোর কোনও বিকল্প নেই।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে বলা হয়েছিল, প্রধান উপদেষ্টার যে ধরনের ইমেজ রয়েছে তাতে দ্বি-পাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক দাতারা প্রচুর ঋণ নিয়ে আসবেন। কিন্তু মনে রাখা দরকার যে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে তারা এটা একেবারেই প্রফেশনালি দেখেন, একটি দেশ আরেকটা দেশকে কতটুকু ঋণ প্রদানে রিপেমেন্টের ক্ষমতা আছে, সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করে নেন। সেই বিবেচনা করলে এই মুহূর্তে আসলে আমাদের রিপেমেন্টর ক্যাপাসিটি যথেষ্ট দুর্বল এবং এখনও ঝুঁকির মধ্যে আমরা রয়ে গিয়েছি।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট ঘাটতির অঙ্ক ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।