Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, লন্ডনে যে বৈঠক হয়েছে, তাতে জুলাই ঘোষণাপত্র, বিচার ও মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে আমরা কোনো বার্তা দেখিনি। শুধু একটি দলকে খুশি করার জন্য নির্বাচনের রাস্তায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষার সাথে প্রতারণার সামিল। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানাতে গতকাল জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

নাসীরুদ্দীন বলেন, জনগণের যে আকাক্সক্ষা ছিল, সংস্কার এবং বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। এর আগে নব্বইয়ে যে সামাজিক চুক্তি হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়ন না করে বাংলাদেশকে সেখানে না নিয়ে একটি ভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সে পুরাতন বন্দোবস্তের প্রক্রিয়া আজকের বাংলাদেশ দেখছে।
এনিসিপির এই নেতা বলেন, বিদেশের মাটিতে বসে সভা হয়েছে। যেখানে দেশের মাটিতে শহীদদের ফ্যামিলি এখনো কাঁদছে, আহতরা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশের মাটি রেখে বিদেশের মাটিতে এ ধরনের সভা হয়। জনগণের প্রত্যাশাকে চাপিয়ে একটি দলের প্রত্যাশা অনুযায়ী যখন সরকার কথা বলে, সেই সরকার বাংলাদেশের মাটিকে অবজ্ঞা করে।

নাসীরুদ্দীন বলেন, যে বৈঠক হয়েছে তাতে বাংলাদেশের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। আমরা নতুন কোনো বন্দোবস্তের প্রক্রিয়া দেখিনি। দেশের সিদ্ধান্ত দেশের মাটিতেই হবে। দেশের সিদ্ধান্ত বিদেশের মাটিতে হলে সেটি জনগণ কখনো মানবে না। মানুষের যে আকাক্সক্ষা ছিল, সংস্কার হবে, বিচার হবে, একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন হবে এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে। সে প্রক্রিয়ার দিকে নিয়ে না গিয়ে পেছনের দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকার যদি নতুন দিকে নিয়ে না যায়, তাহলে যে এনসিপি মনে করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের’ জন্ম দিতে হবে। দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই আমরা যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

এনসিপির অবস্থান তুলে ধরে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র, বিচার প্রক্রিয়া, মৌলিক সংস্কার এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন না হলে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব না, আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের দিকে যাব। আমরা অনেক আগ থেকেই বলে আসছি, একটি কাঠামোগত বিন্যাস না হয়, তা এনসিপি বিশ্বাস করে না।

তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুতগতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক। নির্বাচন ফেরুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে, এটা ফ্যাক্ট না। আমাদের কাছে ফ্যাক্ট হলো, জুলাই ঘোষণাপত্র, বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমের কালো আইনগুলো বাতিল করে নতুন ব্যবস্থার দিকে যাত্রা। আমরা যদি নতুন পথে না গিয়ে শেখ হাসিনার পথেই যাই, তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য একটি গভীর সংকট।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, সরকার একটা নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে লন্ডনে বসে মিটিং করছে। এটা জনগণের বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য অশনিসংকেত। সরকার এটা বাংলাদেশে করতে পারতো। তিনি বলেন, বিএনপি গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, তাদের বিচার নিয়ে ফোকাসড না। বাংলাদেশে একটি সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন, সংস্কার প্রক্রিয়া না হলে ভবিষ্যতেও দলের প্রধানদের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে হবে।