
হঠাৎ করেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত ৭ জুন থেকে শুরু হওয়া এ তাপপ্রবাহ আজও (১০ জুন) চলার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বুধবার (১১ জুন) থেকে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও কোনো কোনো জায়গায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
ষড়ঋতুর দেশ হওয়ায় সময়ভেদে তাপমাত্রা কম-বেশি হয় আমাদের দেশে। এ ক্ষেত্রে সুস্থতায় করণীয়ও বদলে যায়। অধিকাংশ মানুষেরই জানা যে, কোন তাপমাত্রায় করণীয় কী। এরপরও অনেকেই জানেন না―কোন তাপমাত্রায় কী খেতে হবে, কী পরতে হবে এবং কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এই ব্যাপারে একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) কয়েকজন গবেষক। সংস্থাটি জানিয়েছে, থার্মোমিটার দেখে বা মোবাইল ফোনে প্রতিদিনের তাপমাত্রা জানা শুধু অতিরিক্ত গরমের দিনে নয়, সারা বছর সুস্থ থাকার জন্য জরুরি।
আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে, যদি তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বা তার বেশি হয়, অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা জরুরি। এই তাপমাত্রা টানা দুইদিনের বেশি থাকলে এ তাপপ্রবাহকে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কেমন লাগতে পারে:
অসহ্য গরম, অনেক পিপাসা, ক্লান্তি ও দুর্বলতা।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি:
অতিরিক্ত ঘাম ও পানিশূন্যতা, খিঁচুনি, হিট স্ট্রোক, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ।
ঝুঁকিতে কারা:
যারা খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন। শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন- রিকশা বা ভ্যান চালক, কৃষক, নির্মাণ শ্রমিক। গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যারা চুলার পাশে দীর্ঘ সময় কাজ করেন।
সতর্ক থাকতে হবে, যদি...:
পায়ের চামড়া লাল হয়ে গেলে, মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরালে, বমি বমি ভাব হলে, প্রস্রাব কমে গেলে বা রং পরিবর্তন হলে, ঘাম না হলে, চোখে ঝাপসা বা অন্ধকার দেখলে, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে, হৃৎস্পন্দন দ্রুত হলে এবং উল্টা-পাল্টা বা অসংলগ্ন আচরণ বা অজ্ঞান হলে।
ঝুঁকি এড়াতে মেনে চলুন:
কড়া রোদ এড়িয়ে চলুন, মাথা ঢেকে রাখুন। রোদে কাজের সময় একটু পরপর ছায়ায় বিশ্রাম নিন। ঢিলে-ঢালা হালকা রঙের আরামদায়ক পোশাক পরুন। প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করুন। বেশি বেশি পানির ঝাপটা নিন, গোসল করুন, শরীর ঠান্ডা রাখুন। সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন। বাসি, তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন।
✪ আরও পড়ুন: আমের সঙ্গে যে ৫ ধরনের খাবার খেলেই বিপদ
এছাড়া আইসিডিডিআরবির দেয়া অন্যান্য পরামর্শগুলো দেখে নিন একনজরে―
