Image description
 

যেখানে সারা দেশের মানুষ ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা, পরিবার-পরিজনকে ঘিরে কাটে আনন্দঘন মুহূর্ত, সেখানে ঈদের দিনেও নিঃশব্দে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। ঈদের ছুটির দিনগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন দেশের প্রধান প্রধান সড়ক-মহাসড়কে।

রংপুর রেঞ্জের হাইওয়ে পুলিশের বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ভোর থেকে রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন, কেউ বা ব্যস্ত দুর্ঘটনাস্থল সামলাতে। কেউ আবার নামাজের সময় পর্যন্তও ছুটি পাননি। এমনকি ঈদের দিনটিও অনেকে পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেননি।

পঞ্চগড় থেকে বগুড়া পর্যন্ত বিস্তৃত হাইওয়ে পুলিশের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন থাকা সদস্যদের মুখে ঈদের আনন্দ নয়, বরং দায়িত্বের গাম্ভীর্য।

 

রংপুর রেঞ্জের হাইওয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, "দেশের মানুষ যাতে নিরাপদে ঈদ করতে পারে, সেই দায়িত্ব আমাদের কাঁধে। আমাদের প্রতিটি সদস্য স্বেচ্ছায় এবং দায়িত্ববোধ থেকে ছুটি না নিয়ে সড়কে রয়েছেন। কেউ কেউ রাস্তায় ঈদের নামাজ পড়েছেন, কেউ আবার নামাজ পড়ার সময়টুকুও পাননি। পরিবার থেকে দূরে, সড়কেই কাটছে তাদের ঈদ।"

 

তিনি আরও বলেন, "গোটা রেঞ্জে বাড়ি ফেরা মানুষের সুরক্ষাই এখন আমাদের প্রধান দায়িত্ব। ঈদের সময় যানজট ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি। হাইওয়ে পুলিশের প্রতিটি সদস্য প্রশংসার দাবিদার।"

নীলফামারীর সৈয়দপুর হাইওয়ে ফাঁড়ির কনস্টেবল মাহফুজ বলেন, "এই নিয়ে টানা তিনবার ঈদ পরিবার ছাড়া কাটালাম। কষ্ট হয়, তবে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারছি ভেবে গর্বও হয়।"

বগুড়ার এক পয়েন্টে কর্তব্যরত সার্জেন্ট লুৎফর রহমান বলেন, "ছেলে বলেছে – আব্বু, তুমি এবারও আসবে না? কীভাবে বলি, আমি যে রাস্তায় থাকতেই ভালোবাসি।"

এভাবেই হাজারো পুলিশ সদস্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে, সবার ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

তাঁদের এই আত্মত্যাগের গল্প হয়তো পত্রিকার পাতায় জায়গা পায় না, কিন্তু প্রতিটি সুশৃঙ্খল সড়ক, প্রতিটি নিরাপদ ঈদযাত্রা তাঁদের নিষ্ঠার নীরব সাক্ষী।

সানজানা