Image description
কালুরঘাট সেতুতে ট্রেনের সঙ্গে কয়েকটি গাড়ির সংঘর্ষ

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে রেলের গেটম্যানের লাল পতাকা ও স্টেশনের লাল সংকেত উপেক্ষা করে চলতে থাকা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি পাঁচটি যানবাহনের ওপর উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই এক শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত পাঁচজন। দুর্ঘটনার পর ট্রেনের ভেতরে আটকে পড়েন নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ অন্তত এক হাজার যাত্রী। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্টেশন মাস্টার আরও বলেন, ‘কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টেপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক তা মানেননি।’

জান আলী হাট স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত গেটম্যান মো. মাহবুব বলেন, আমি সিগন্যাল অমান্য হওয়ার সম্ভাবনা বুঝতে পেরে নিজেই সেতুর মুখে গিয়ে ট্রেন থামাতে লাল পতাকা নাড়িয়ে সংকেত দিই। কিন্তু তবুও ট্রেন চালক সেটি উপেক্ষা করেন।

এ ঘটনায় একটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাস ও দুটি মোটরসাইকেল ট্রেনের নিচে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় একটি শিশুকে নিয়ে একজন ব্যক্তি কাঁদতে কাঁদতে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছিলেন। তার স্ত্রী ট্রেনের নিচে চাপা পড়েছেন বলে আশপাশের লোকজন জানিয়েছেন।

কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার আমিনুল ইসলাম জানান, ‘রাত ১১টার আগে আমরা খবর পাই। দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘পাঁচজনকে আহত অবস্থায় ক্যাজুয়ালটি বিভাগে আনা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। একজন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’

দুর্ঘটনার পর ট্রেনটি সেতুর মাঝামাঝি অবস্থানে আটকে পড়ে। সামনের অংশ রেলসেতুতে, পেছনের অংশ রেলক্রসিংয়ের ওপর। এতে যাত্রীরা নামার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। ট্রেনের ভেতরে আটকে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘আমরা জানি না কী হয়েছে। ট্রেন থেমে আছে অনেকক্ষণ। শুধু কান্নাকাটি আর চিৎকার শুনতে পাচ্ছি। নারী ও শিশুরা আতঙ্কে কাঁপছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রেনের নিচে দুমড়ে যাওয়া একটি সিএনজি অটোরিকশা এবং একটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে। স্থানীয়রা আহতদের বের করে নিচ্ছেন। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।