Image description

চট্টগ্রাম নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য চার উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের টিম গঠন করে দেন। গত ১৯ জানুয়ারি উপদেষ্টারা চট্টগ্রামে এসে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেন। এতে সামনের বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতাকে সহনীয় পর্যায়ে আনতে ১১ দফা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়, সময় দেওয়া হয় মে মাস পর্যন্ত। সেই কর্মপরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সেটা দেখার প্রায় প্রতি সপ্তাহে একজন করে উপদেষ্টা চট্টগ্রামে এসে মনিটরিং করছেন।

এর পর জুনের শুরুতেই দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রাম নগরীর যেসব এলাকা আগে অল্প বৃষ্টিতেও পানির নিচে থাকতো, সেগুলোর অধিকাংশতেই এবার অতিবৃষ্টিতেও জলজট হয়নি। কোথাও কোথাও জলজট হলেও পানি দ্রুত নেমে গেছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘ সময় থেকেছে।

পানিবন্দী সড়কে গাড়ি চালানোই ছিল দায় ! ফাইল ছবি-সারাবাংলা।

জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের হিসেবে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ এলাকা জলাবদ্ধতামুক্ত হয়েছে কিংবা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম নগরীর ৯৫ শতাংশ এলাকা জলাবদ্ধতামুক্ত হয়েছে কিংবা পুরোপুরি সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।

গত ২৯ মে থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ওইদিন বিকেল তিনটা থেকে ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২২৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। কিন্তু নগরী জলাবদ্ধতামুক্ত ছিল। অথচ ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট ২৪ ঘণ্টায় নগরে বৃষ্টি হয়েছিল ১২৩ মিলিমিটার। তাতেই তলিয়ে গিয়েছিল প্রায় পুরো নগরী। নগরীর মুরাদপুর, চকবাজার, কাপাসগোলাসহ আরও বিভিন্ন নিচু এলাকায় প্রায় বুক সমান পানি জমে গিয়েছিল।

আবার ৩১ মে রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত আবার মুষলধারে বৃষ্টি হয়, যা থেমে থেমে অব্যাহত ছিল ১ জুন পর্যন্ত। ওইদিন বিকেল তিনটা পর্যন্ত ১৯৪ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে নগরীর কাতালগঞ্জ, চকবাজার, মনসুরাবাদ, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, মুরাদপুরসহ কিছু কিছু এলাকায় জলজট সৃষ্টি হয়। সেনাবাহিনী ও চসিকের কর্মকর্তারা জানান, সাময়িক জলজট হলেও পানি বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না।

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ দু’টি, সিটি করপোরেশন একটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চার প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ১৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নেওয়া ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে তারা কাজ শুরু করে। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি সাড়ে ৮৪ শতাংশ।

গত সাত বছরে প্রকল্পের তেমন সুফল না মিললেও এবার দৃশ্যমান অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর দীর্ঘসূত্রিতা ছিল। সংস্থাগুলোর মধ্যে ফাইট ছিল। কোনো ধরনের সমন্বয় ছিল না। ফলে একেক সংস্থা নিজেদের মতো একেকভাবে কাজ করেছে। এক সূতায় বাঁধা যায়নি। কিন্তু এবার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা চারজন উপদেষ্টাকে দিয়ে একটি মনিটরিং টিম করে দিয়েছেন।’

‘উপদেষ্টারা এসে আমাদের সঙ্গে মিটিং করেছেন, সব সংস্থাকে এক করেছেন। সমন্বয়ের কোনো ঘাটতি নেই। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর দীর্ঘসূত্রিতাও নেই। ফলে কাজে গতি এসেছে। সমন্বিত কাজের একটা সুফল দৃশ্যমান হয়েছে। ২০২৩ সালে নগরীর ১১৩টি স্থানে জলাবদ্ধতা হয়েছিল, যার স্থায়িত্ব ছিল ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা, কোথাও কোথাও তারও বেশি। ২০২৪ সালে ৬৬টি স্থানে একই ধরনের জলাবদ্ধতা হয়েছিল। এবার আমাদের অর্থাৎ সেনাবাহিনীর হিসেবে আগের বছরের চেয়ে ৫০ শতাংশ এলাকাকে আমরা জলাবদ্ধতামুক্ত করতে পেরেছি।’

বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে নষ্ট হতো আসবাবপত্র। ফাইল ছবি-সারাবাংলা।

কিছু এলাকা এখনও জলাবদ্ধতামুক্ত করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নির্ণয় করতে হবে পানি কত সময় ধরে আটকে থাকছে, সেটার ওপর ভিত্তি করে। কিছু কিছু এলাকায় সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে পানি জমে। কিন্তু আগের মতো ৫-৬ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল না। খাল পরিষ্কার আছে বলে পানি দ্রুত গিয়ে সেখানে পড়েছে। আবার নালা-ড্রেন পরিষ্কার আছে বলে পানি খাল পর্যন্ত যেতে পারছে।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি টানা চারদিন চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমাদের হিসাবে বৃষ্টিতে ৯৫ শতাংশ এলাকা ক্লিয়ার ছিল, ৫ শতাংশ এলাকায় পানি উঠেছে। যেমন- কাতালগঞ্জ আর চকবাজারে পানি উঠেছিল। সেখানে হিজরা খালের কাজটা শেষ হলে আর পানি উঠবে না। আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এবার নালা, খাল ও ড্রেনগুলোর ময়লা-আর্বজনা গত দুই মাস ধরে পরিষ্কার করেছি। এ ছাড়া, সিডিএ যে কাজ করছে, আমাদের সঙ্গে তাদের একটা সমন্বয় তৈরি হয়েছে। সমন্বয়ে ঘাটতি না থাকায় জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য যে চারজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন তারা হলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষযক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিমের বাসাও থাকতো পানির নিচে। রিকশায় চড়ে অফিসে যেতে হতো মেয়রকে। ফাইল ছবি-সারাবাংলা।

চার উপদেষ্টার তৎপরতায় জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে যুক্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ তৈরি হয়। এরপর এবার জলাবদ্ধতার স্পটগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত সিডিএর অন্য একটি প্রকল্প এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পুরো শহরকে ১৬টি কিউআরএফ (কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স) এর অধীন ভাগ করা হয়। যেখানে পানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেখানে শ্রমিক নিয়োজিত করা হয়। সবগুলো মনিটরিং সেল থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মনিটরিং সেলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কেউ জলাবদ্ধতার তথ্য দিলে সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মতো কঠিন কাজ সফলভাবে করতে পারায় উপদেষ্টাদের পদক্ষেপে সুফল মিলেছে। তবে এ সুফল ধরে রাখতে হলে পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়ে মনিটরিং অব্যাহত রেখে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাজের গতি ঠিক রাখতে হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রকল্পভুক্ত ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টির সংস্কার ও খনন কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। খালগুলো হচ্ছে– রাজাখালী খাল–১, ২ ও ৩, কলাবাগিচা খাল, মরিয়মবিবি খাল, টেকপাড়া খাল, সদরঘাট খাল–১ ও ২, ফিরিঙ্গিবাজার খাল, মোগলটুলি খাল, গুপ্তা খাল, আজববাহার খাল, নাছির খাল, বামনশাহী খাল, রুবি সিমেন্ট খাল, নয়ারহাট খাল, উত্তরা খাল, খন্দকিয়া খাল, ১৫ নম্বর ঘাট খাল, বদরখালী খাল, শীতলঝর্ণা খাল, ত্রিপুরা খাল, গয়নাছড়া খাল, চশমা–তুলাতুলি খাল ও বাকলিয়া খাল।

কাজ চলমান আছে আরও ১০টি খালে। এগুলোর মধ্যে বির্জা খালের ৯৪ শতাংশ, চাক্তাই খালের ৯২ শতাংশ, মহেশ খালের ৯২ শতাংশ, ডোমখালী খালের ৯১ শতাংশ, মহেশখালী খালের ৯০ শতাংশ, চাক্তাই ডাইভারশন খালের ৯১ শতাংশ, মির্জা ও মির্জা এক্সটেনশন খালের ৭২ শতাংশ, নোয়াখালের ৬০ শতাংশ, রামপুর খালের ৫৮ শতাংশ ও জামালখান খালের কাজ শেষ হয়েছে ২৭ শতাংশ।

শুধুমাত্র চকবাজারে হিজড়া খালের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় খালটির কাজ বন্ধ থাকায় নগরীর কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা, চকবাজারসহ আশপাশের এলাকায় এখনও জলজট হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

প্রকল্পের আওতায় ৪৩টি ড্রেন পরিষ্কার করেছে সেনাবাহিনী। এগুলো হচ্ছে- কেবি আমান আলী রোড রাহাত্তারপুল এলাকা, নুরন্নবী কলোনী সংলগ্ন, আজগর আলী মিস্ত্রি বাড়ি সংলগ্ন, ওমর আলী মাতব্বর রোড, ২ নম্বর গেট থেকে নাসিরাবাদ বয়েজ স্কুল, হেমসেন লেন, ঝাউতলা রোড, চন্দনপুরা সিরাজদৌলা রোড, সিএন্ডবি কলোনী থেকে ২ নম্বর গেট, রুমঘাটা জেলেপাড়া, এক্সেস রোড কালাম কলোনী, মির্জা এক্সটেনশন থেকে সানমার টাওয়ার, চট্টেশ্বরী, দেব পাহাড় ছড়া, কাপাসগোলা স্কুল থেকে বহাদ্দারহাট পুলিশ বক্স, অক্সিজেন মোড়, আগ্রাবাদ টিএন্ডটি স্কুল–হাজীপাড়া ড্রেন, বিএসআরএম থেকে অক্সিজেন বাম পাশ, শান্তিবাগ ড্রেন, চুনা ফ্যাক্টরী মোড় ড্রেন, এন মোহাম্মদ থেকে বহদ্দারহাট পুলিশবক্স, মোহরা কাজিরহাট ইউ ড্রেন, মধ্য বদরখালী ড্রেন, বিএসআরএম থেকে অক্সিজেন ডান পাশ, শুলকবহর মাদ্রাসা থেকে সুফিবাড়ি, আজব বাহার খালের সংযোগ ড্রেন, বাদুরতলা ছড়া, শুলকবহর ডেকোরেশন গলি, এস এ পরিবহন বাইলেইন ড্রেন, আবু বক্কর জামে মসজিদ সংলগ্ন ড্রেন, চুনা ফ্যাক্টরী মোড় ড্রেন (শ্যামলী আবাসিক), খতিবের হাট– শমসের পাড়া, টেকবাজার ড্রেন, পুরাতন বিমান অফিস, চামড়ার গুদাম, চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট পুলিশবক্স, মুরাদপুর থেকে এন মোহাম্মদ এলাকা, অনন্যা আবাসিক এলাকা, রূপসা বেকারি ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকা।

প্রকল্পের আওতায় নগরীর খাল ও ড্রেন থেকে গত এক বছরে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৯৪ হাজার ৯৫৬ ঘনফুট মাটি ও আবর্জনা অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ ঘনফুট হচ্ছে মাটি এবং ৮২ লাখ ৪০ হাজার ৬৬ ঘনফুট হচ্ছে স্ল্যজ। খাল ও ড্রেন থেকে মাটি ও স্ল্যজ অপসারণ করায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের তীর থেকে ৩ হাজার ৭৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

জলাবদ্ধতার সীমাহীন দুর্ভোগ দৃশ্যত কমে আসায় চট্টগ্রাম নগরবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুম পুরোপুরি শুরু হলে এ সুফল কতটুকু অব্যাহত থাকবে, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন নগরবাসী।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রধান কাজটা করছে সিডিএ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। তাদের কাজের ৮৪ থেকে ৮৫ শতাংশ প্রায় শেষ হয়েছে। এজন্য এবার আগ্রাবাদ-হালিশহর বাদে নগরীর মূল অংশে জলাবদ্ধতা সহনীয় থাকবে বা হবে না, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু কাজগুলো ‍গুছিয়ে করার একটা বিষয় আছে, সেটা প্রত্যাশিত মাত্রায় না হওয়ায় নাগরিক সমাজের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে আদৌ সুফল মিলবে কি না।’

‘এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা একটা টিম করে দিয়েছেন। দুজন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এবং ফাওজুল কবির খান গত পাঁচমাস ধরে নিরলস পরিশ্রম করেছেন। উনাদের তৎপরতার কারণে সিডিএ, সিটি করপোরেশন এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় তৈরি হয়েছে এবং কাঙ্খিত সুফল আমরা পেয়েছি। এজন্য উনাদের কাছে আমরা চট্টগ্রামবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’

সুফল ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে প্রকৌশলী দেলোয়ার বলেন, ‘প্রকল্পগুলোর মধ্যে যেসব ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতা আছে, সেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। এরপর একটি অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স ম্যানুয়েল তৈরি করতে হবে। সেখানে প্রকল্পের কাজ শেষে খাল, নালা, ড্রেন কীভাবে পরিষ্কার রাখা যাবে, রেগুলেটর কিংবা স্লুইচগেটগুলো পরিচালনার বিষয়ে গাইডলাইন থাকবে। সেই গাইডলাইন মেনে সিটি করপোরেশন কাজ করবে। আলটিমেটলি প্রকল্পের কাজ শেষে মূল দায়িত্বটা তো সিটি করপোরেশনকেই পালন করতে হবে। গাইডলাইন না থাকলে সনাতন পদ্ধতিতে কাজ করলে সুফল ধরে রাখা যাবে না।’