
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে জিম্মি করে নববধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ভিকটিম নববধূ। মঙ্গলবার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে ভুক্তভোগী সাক্ষ্য দেন বলে জানিয়েছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল হোসেন পিপি।
তিনি জানান, নববধূর স্বামী ওই মামলার বাদীর সাক্ষ্য শেষ হয়েছে গত ২৬ মে। ক্যামেরা ট্রায়ালে আদালতে মামলার ভিকটিম সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতের কক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
পিপি আরো জানান, মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ ১৮ জুন ধার্য রয়েছে। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় কারাগারে আটক মামলার ৮ আসামি ছাত্রলীগ ক্যাডার আদালতে উপস্থিত করা হয়েছিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল থেকে গত মে মাসে স্থানান্তর হয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর পর থেকে মামলার বাদী ভুক্তভোগীসহ চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে বাদীর সাক্ষ্য নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। বাদীর সাক্ষ্য এজাহারকে ‘সাপোর্ট’ করে জবানবন্দি না দেওয়ায় বৈরী ঘোষণা করে জেলহাজতে আবদ্ধ রেখে সাক্ষ্য সম্পন্ন করার আবেদনও করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তৎকালীন ছাত্রলীগ ক্যাডার স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে নাম উল্লেখিত ছয়জন ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ডিএনএ পরীক্ষায় আট আসামির মধ্যে ছয়জনের সঙ্গে ধর্ষণের আলামতের মিল পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- টিলাগড় এলাকার প্রভাশালী রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ও মাহফুজুর রহমান।