
পবিত্র ঈদুল আজহার আর ৫ দিন বাকি । প্রতিবছর এ সময়ে মসলার চাহিদা থাকে বেশি । এ সময় মসলাজাত পণ্যের দামও থাকে চড়া । তবে এবার বেশির ভাগ মসলার দাম গত বছরের তুলনায় কম । ব্যবসায়ীরা বলছেন , নতুন মৌসুমের দেশি মসলার পর্যাপ্ত সরবরাহ , আমদানি করা মসলার দাম কম থাকা এবং আমদানির ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতার কারণে এবার মসলার সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে । ভোগ্যপণ্যের দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান , গত শনিবার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০-৬০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে । ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের ( টিসিবি ) তথ্যমতে , গত বছর এ সময় দেশের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০-৭৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা । গত বছরের একই সময়ে দাম ছিল প্রতি কেজি দেশি আদা ৪০০-৪৫০ ও চীনা আদা ২২০-২৫০ টাকা । বর্তমানে দেশি আদা মানভেদে ১১০-২৫০ এবং আমদানি করা ( ভারতীয় ও চীনা ) আদা ১১০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । বর্তমানে
বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১১০ - ১৬০ ও চীনা রসুন ১৮৫-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । গত বছর একই সময়ে ছিল দেশি রসুন ১৯০-২২০ ও চীনা রসুন ২১০-২৪০ টাকা । খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ( পেঁয়াজ , রসুন ও আদার মার্কেট ) ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো . ইদ্রিচ মিয়া বলেন , পেঁয়াজ , রসুন ও আদার দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম । দাম কম থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন , দু - এক মাস আগে দেশি পেঁয়াজ - রসুন খেত থেকে তোলা হয়েছে । তাই বাজারে এখন পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজ - রসুন রয়েছে । এ
ছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও দাম কম থাকায় তিনটি পণ্যের আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে । ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় কোরবানির মৌসুমে পণ্যের দাম না বেড়ে উল্টো কমেছে । কাঁচা মসলাপণ্যের পাশাপাশি জিরা , দারুচিনি , লবঙ্গ ধনিয়া , গোলমরিচসহ ঈদের প্রয়োজনীয় সব শুকনা মসলার দামও গত বছরের তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা । খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলাপণ্যের দোকান যাচাই করে পাওয়া তথ্যমতে , গত শনিবার বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি শুকনা
মরিচ ১২০-১৭০ , ভারতীয় মরিচ ২১০- ২৫০ ; দেশি হলুদ ১৯০-২০০ , ভারতীয় হলুদ ২৫০-২৩০ ; জিরা ৫৭৫-৬২০ , মোটা দারুচিনি ৩৮০-৩৯০ , চিকন দারুচিনি ৪৩০-৪৪৫ ; তেজপাতা ১৩০- ১৪০ , লবঙ্গ ১ হাজার ২৪০ ; গোলমরিচ ১ হাজার ১৪০ ; ধনিয়া ১২০-১৭০ ; মেথি ১২০ , কালিজিরা ৩৭০-৩৭৫ , সরিষা ৯৫-৯৭ , এলাচি ৩ হাজার ৯৫০ থেকে ৪ হাজার ৫০ ; জায়ফল ৫৬০ ও জয়ত্রী ২ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী মেসার্স ইসহাক সওদাগরের স্বত্বাধিকারী সেকান্দার হোসেন বলেন , গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় সব মসলার দাম নিম্নমুখী । ফলে ঈদের বাড়তি চাহিদা থাকার পরও মসলার বাজারে স্বস্তি বিরাজ করছে । বাংলাদেশ গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন , ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর উদার মনোভাব ছাড়াও বিশ্ববাজারের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে দাম কমছে । তবে পাইকারি বাজারে যে দামে মসলা বিক্রি হচ্ছে , খুচরা বাজারে তার প্রভাব নেই । খুচরা বাজারের দামকে আমলে নিয়ে পাইকারি বাজার মনিটরিং করা হলেও খুচরা বাজার তদারকি না থাকায় ভোক্তারা প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না বলে মনে করছেন তিনি ।