Image description
বড়লেখায় ১৫৩ ও মেহেরপুর সীমান্তে ১৯ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ

বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অব্যাহতভাবে পুশইন চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। পুশইন না করে বৈধ চ্যানেলে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করে আসছে ঢাকা। তবে সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে গতকালও মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১৫৩ জন ও মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ নিয়ে মোট ৭৪২ জনকে অবৈধভাবে পুশইন করেছে বিএসএফ।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তর সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুমিল্লা, ফেনী, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর জেলার সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৬৬৪ জনকে পুশইন করেছে ভারত। এ ছাড়া সুন্দরবনের গহিন অরণ্যের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ৭৮ জনকে পুশইন করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশইন করায় বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। এ ছাড়া পুশইন রোধে বিজিবি সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।

জানা যায়, সিলেটের বিয়ানীবাজারের নয়গ্রাম সীমান্ত দিয়ে ৩২ জন, মৌলভীবাজারের বড়লেখার শাহবাজপুর সীমান্ত দিয়ে ৭৯ জন, পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে ৪২ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। শনিবার রাত আড়াইটা থেকে ঘন জঙ্গল ও বিলের মধ্য দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই তাদের আটক করে বিজিবি। তারা কোন দেশের নাগরিক তা এখনো জানা যায়নি। তাদের পরিচয় নিশ্চিতে যাচাইবাছাই চলছে।

এদিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। গতকাল ভোরে সীমান্তের কাঁটাতারের গেট খুলে তাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে  ঠেলে দেওয়া হয়। প্রবেশের পরপরই তাদের আটক করে মুজিবনগর থানা হেফাজতে রাখা হয়। তাদের মধ্যে ৫ পুরুষ, ৫ নারী এবং ৯ জন শিশু রয়েছে। বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হাসান পিপিএম বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল এবং নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের সহযোগিতায় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গোয়েন্দা তৎপরতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুশইনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ১৯ জনই নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। নীলফামারী, কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা বলে তারা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তাদের দেওয়া পরিচয় যাচাই করার পর তাদের বিষয়ে আইনানুগ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।