
ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ঢাকায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১ জন। শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও শিশুসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এসব দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
ফরিদপুরে দুই শ্রমিকের মৃত্যু : ফরিদপুর সদর ও বোয়ালমারী উপজেলায় পৃথক ঘটনায় তিন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার সকালে ইটবোঝাই ট্রাক থেকে পড়ে মোহাম্মদ মিলন (৩২) নামে এক শ্রমিকের ওপর দিয়ে আরেকটি গাড়ি চলে যায়, ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। বোয়ালমারী-মোহম্মদপুর সড়কে সকাল সাড়ে ৭টায় ইটবোঝাই থ্রি-হুইলারের ধাক্কায় অটোভ্যানে থাকা রাজমিস্ত্রি রাকিব শেখ (২৩) মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান। এ ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হন।
কিশোরগঞ্জে বাজারে ট্রাকের তাণ্ডব : কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আকবরনগর বাসস্ট্যান্ড বাজারে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় কাঠবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে দুধ বিক্রেতা আলিম মিয়া (৬০) ঘটনাস্থলে এবং মুরগি বিক্রেতা আঙ্গুর মিয়াকে (৪৫) ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। এ ঘটনায় ইউনুস মিয়া (৪৫), নয়ন মিয়া (১৭), স্বপন মিয়াসহ (২৫) ১০ জন আহত হন। ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি সাহাবুর রহমান জানান, ট্রাকচালক পালিয়েছে, তবে ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলে দুই দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মুলিয়া এলাকায় বিকেল ৪টায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রান্তিক বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে উল্টে বিদ্যুৎ খুঁটির ধাক্কায় তার ছিঁড়ে যায়।
এতে সৌদি প্রবাসী আব্দুল ছালাম (৪০) ও এস এম আলম (৬৫) ঘটনাস্থলে মারা যান। আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের এসআই কামরুল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। একই দিন সখীপুরে দুপুরে সখীপুর-গোড়াই সড়কে ট্রাকচাপায় সোয়াদ আল সাফওয়ান (৫) নামে এক শিশু মারা যায়। তার বাবা মাসুদ রানা জানান, অটোগাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার সময় সাফওয়ান ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়। সখীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, ট্রাক আটক করা হয়েছে, মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু : রাজধানীর বাংলা মোটরে ভোর সাড়ে ৪টায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় ধানম-ি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরশাদ আহমেদ সরকার (১৮) মারা যান।
হাতিরঝিল থানার এসআই সহিদুল হাসান জানান, মোটরসাইকেল চালানোর সময় ভ্যানের ধাক্কায় আরশাদ ছিটকে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভোর ৫টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ভ্যান শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আরশাদের বন্ধু ইসমাঈল হোসেন ঈশান জানান, আরশাদ লালবাগের পোস্তা এলাকার বাসিন্দা এবং মাওয়ায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য রাতে বের হয়েছিল।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ ঘটনায় ট্রাক জব্দ করা হলেও চালক পালিয়েছে। পরিবারের আবেদনে ময়নাতদন্ত ছাড়াই কয়েকটি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এসব ঘটনা সড়ক নিরাপত্তা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার বিষয়টি তুলে ধরেছে। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের কাছে কঠোর ব্যবস্থা ও সচেতনতার দাবি উঠেছে।