
সিলেট নগরীর স্থানে স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আড্ডাবাজি। গ্রুপভিত্তিক এলাকা ভাগ করে চলে এ আড্ডা। প্রভাব বিস্তার ও অপকর্মের জন্যই মার্কেটের সামনে, সড়কের পাশে ও আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখে এ আড্ডা বসানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব আড্ডা থেকেই নিয়ন্ত্রণ হয় ভারতীয় চোরাইপণ্য, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ নানান অপকর্ম। আড্ডাবাজি কিংবা কোনো অপকর্মে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এর পরও থামছে না আড্ডাবাজি। সাধারণ মানুষের মধ্যে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, রাস্তার মোড়ে আড্ডা দিয়ে দলীয় রাজনীতি হয় না। এটি কেউ ভালো চোখে দেখেন না। ফ্যাসিস্ট আমলে এরকম আড্ডা থেকে হানাহানির ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ না করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এরকম কাজে কেউ জড়িত হলে রেহাই পাবেন না।
মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কোথাও আড্ডা দিচ্ছেন কিংবা অপকর্মে জড়াচ্ছেন এমন অভিযোগ নেই। তবে রাস্তাঘাটে আড্ডা দিলে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এ ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। অগ্রাহ্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নগরের জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোড, শাহি ঈদগাহ, টিলাগড়, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, বালুচর, টিবিগেট, লামাবাজার, রিকাবিবাজার, মদিনা মার্কেট, সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, সোবহানীঘাট, উপশহরসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নাম ভাঙিয়ে আড্ডা দিতে দেখা যায়। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নগরীর শতাধিক স্থানে আড্ডা বসাত যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতি চলত এসব আড্ডা থেকে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ভারতীয় চিনির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হতো এসব স্থান থেকে। চুন থেকে পান খসলেই এসব আড্ডা থেকে ক্যাডাররা অস্ত্র হাতে হামলা চালাত। জড়াতো সংঘাত-সংঘর্ষে। গলির মুখের কিশোর গ্যাং আর ক্যাডারদের ভয়ে তটস্থ থাকত সাধারণ মানুষ।
৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পলায়নের পর মোড়ে মোড়ে আস্তানা গড়ে তোলা ক্যাডারভিত্তিক নেতারা পালিয়েছে। রয়ে গেছে তাদের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব সদস্য পাচ্ছে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতার সান্নিধ্য। মেতে থাকছে আড্ডায়। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে অপরাধ। আওয়ামী লীগ আমলে এসব আড্ডার আড়ালে জনভোগান্তি সৃষ্টি এবং অপরাধ কর্মকা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ঘটনায় সতর্ক সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতারা। পতিত আওয়ামী সরকারের সময়ের মতো কেউ আড্ডা বসালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা গণমাধ্যমে একাধিকবার বিবৃতি পাঠিয়ে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেছেন। এরকম কাজে কেউ জড়িত থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।