Image description

অবশেষে বাজারে আসছে টাকার নতুন ডিজাইনের নোট। ঈদের আগে বাজারে আসা এসব নোটের কোনোটিতে থাকছে না বঙ্গবন্ধুর ছবি। জুলাই বিপ্লবে শহীদ, তারুণ্য, সুন্দরবন, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় থাকছে নতুন নোটের নকশায়। জানা গেছে, আগামী 
২৫ বা ২৬শে মে ছাড়া হতে পারে ২০ ও ৫০ টাকার নোট। ২৭শে মে বাজারে আসছে ২০ টাকার নোট। এতে কান্তজিউ মন্দির ও বৌদ্ধমন্দিরের ছবি থাকবে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের চিত্র ও আতিয়া মসজিদের ছবিযুক্ত ৫০ টাকার নোট ২৯ বা ৩০শে মে এবং বঙ্গভবন ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবিসংবলিত ১০০০ টাকার নোট ২রা জুন বাজারে আসবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ১০০০ টাকার নোটসহ কয়েকটি ভিন্ন নোটের ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। এবার কোনো নোটে মানুষের পুরোপুরি ছবি থাকছে না। তবে নকশায় প্রাধান্য পাচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য। সব মিলিয়ে প্রথম ধাপে বাজারে ছাড়া হবে ১ হাজার কোটি টাকা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ৫ টাকায় থাকবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের ছবি, ১০ টাকায় থাকবে তারুণ্যের ঐক্যের প্রতীক এবং জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ছবি। ১০০ টাকায় থাকবে ইউনেস্কোর স্বীকৃত সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ ও বাঘের চিত্র, যা সাবেক সরকারের বিদায়ের পর নোট রূপান্তরের প্রতীক। ২০০ টাকায় ধর্মীয় বৈচিত্র্যের প্রতীক হিসেবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডা থাকবে, আর ৫০০ টাকায় থাকছে ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলের ছবি।

দুইটি সরকারি ও ৭টি ব্যাংক নোটসহ বাজারে চালু আছে ৯টি কাগুজে মুদ্রা। যার সবগুলোই শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত। জুলাই অভ্যুত্থানের পর এসব নোট পরিবর্তনের দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়ে সেই কার্যক্রম শুরু করলেও, সময় লেগে যায় নানা কারণে। অবশ্য আরিফ হোসেন খান জানান, ধাপে ধাপে আনা হবে বাকি মুদ্রাগুলো। বর্তমানে বাজারে থাকা মুদ্রার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। তবে, ছাপানো অবস্থায় আছে আরও দ্বিগুণের উপরে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪ঠা মার্চ দেশের নিজস্ব কাগুজে মুদ্রা চালু হয়। মানচিত্রখচিত প্রথম নোটটি ছিল ১ টাকার। ১৯৭৩ সালে ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোট ইস্যু করে বাংলাদেশ। এরপর ৫০ ও ৫০০ টাকার নোটের প্রচলন করা হয় ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৯ সালে ইস্যু করা হয় ২০ টাকার নোট। দেশে ২ টাকার নোট চালু হয় ১৯৮৮ সালে। ২০০৯ সালের ১৭ই জুলাই বাজারে আনা হয় সবচেয়ে বেশি মানের ১০০০ টাকার ব্যাংকনোট। আর ২০২০ সালে সর্বশেষ বাজারে আসে ২০০ টাকার নোট।