
বিদেশি কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার পশ্চিম তীরে সফরের সময় ইসরায়েলি সেনারা গুলি ছুড়ে সতর্কবার্তা দেয়। পরে সামরিক বাহিনী ঘটনাটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, প্রতিনিধিদলটির ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
এএফপির একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে প্রতিনিধিদল ও তাদের সঙ্গে থাকা সাংবাদিকরা গুলির শব্দ শোনা মাত্র দৌড়ে আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন। জেনিন শহরটি ইসরায়েলি সেনা অভিযানের জন্য বহুবার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
এদিকে ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও স্পেন ও ইতালি দ্রুত নিন্দা জানিয়েছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী একটি অনুমোদিত কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলকে সরাসরি গুলি করে যেভাবে টার্গেট করেছে, তা একটি ভয়াবহ অপরাধ।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রতিনিধিদল অনুমোদিত পথ থেকে সরে গিয়ে এমন একটি এলাকায় ঢুকে পড়ে, যেখানে তাদের অনুমতি ছিল না।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পোশাক পরা দুজন ব্যক্তি ধাতব গেটের ওপারে দাঁড়িয়ে একটি দলকে লক্ষ্য করে অস্ত্র তাক করে আছে, এ সময় গুলির শব্দ শোনাও যাচ্ছে। ভিডিওটির সত্যতা এএফপি তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি, তবে ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিক জানিয়েছেন এটি সম্ভবত শিবিরের পূর্ব প্রবেশদ্বার।
জানুয়ারিতে জেনিন এলাকায় একটি বড় সেনা অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যার লক্ষ্য কথিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নির্মূল করা। এরপর শিবিরের প্রবেশপথে ইসরায়েলি বাহিনী ধাতব গেট বসিয়েছে, যা ভিডিওতে দেখা যায়।
সফরে অংশ নেওয়া এক ইউরোপীয় কূটনীতিক এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জেনিনের গভর্নরের সঙ্গে শিবির সীমান্তে ছিলাম, ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ শিবিরের ভেতর থেকে টানা গুলির শব্দ শুনতে পাই। তখন সবাই দৌড়ে গাড়ির দিকে ফিরে যেতে শুরু করি।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আহমাদ আল-দিক প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এই বেপরোয়া কাজের আমরা নিন্দা জানাই, বিশেষ করে যখন ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের প্রতিনিধিদলকে ফিলিস্তিনিদের জীবনের বাস্তবতার ধারণা দিয়েছে।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক বৃহৎ সামরিক অভিযানের কারণে জেনিন শরণার্থীশিবির থেকে বাসিন্দারা পালিয়ে গেছে এবং শিবির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই অভিযানে জেনিনে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।