
চুয়াডাঙ্গা সদরের শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু সাঈদের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার শাহরিয়ার শুভ। কৃষক পরিবারের সন্তান শুভ ঢাকার একটি লিফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকার মিরপুরে ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার একমাত্র সন্তান মুহিনের বয়স এখন মাত্র দেড় বছর। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দাদা-দাদি।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে সন্ধ্যায় ছেলের জন্য দুধ কিনতে বের হয়েছিলেন শুভ। ওই সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন পর ২৩ জুলাই তার মৃত্যু হয়। শুভর আয়ে চলত পরিবার। তার মৃত্যুতে পরিবারটি এখন দিশাহারা।
প্রতিবেশী আলাউদ্দিন ডাক্তার জানান, শুভ ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়ের ওপর নির্ভর করে তার ভাই সিয়াম আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত।
চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী আবু ওবায়দা বলেন, শুভর মৃত্যুতে তার পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়েছে। সে তার পরিবার ও ভাইদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করত। পরিবারটা চলত তার আয়ের ওপর। এখন তার স্ত্রী ও সন্তান খুব বিপদে রয়েছে। সরকার যদি তাদের দিকে সুদৃষ্টি দেয়, তাহলে পরিবারটি সুন্দরভাবে চলতে পারবে।
শহীদ শুভর বাবা আবু সাঈদ বলেন, আমার তিন সন্তানের মধ্যে মেজো ছেলে শুভ। গত বছরের ১৯ জুলাই ছেলের জন্য দুধ কিনতে বের হয়ে ঢাকার মিরপুর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়। মারা যায় ২৩ জুলাই। তার অনুপস্থিতে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। মূলত তার আয়ের ওপর ভরসা করে আমার ছোট ছেলেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম। এখন তাকে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। এ ছাড়া শুভর ছেলে ও স্ত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
এদিকে ছেলের নামে একটি সড়কের নামকরণ করায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আবু সাঈদ। তিনি জানান, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন এবং ব্যক্তিগতভাবে কিছু নগদ সহায়তা তাদের দেওয়া হয়েছে।
শহীদ শাহরিয়ার শুভর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বলেন, ১৪ মাস বয়সি সন্তান মোস্তাফিজ মুহিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়। তবে তাকে শুভর পরিচয়ে বড় করতে চাই।