Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন দেয়ালে শিক্ষার্থীদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সচিত্র দলিল। এর মাধ্যমে সংগৃহীত হয়েছে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ঐতিহাসিক চিত্র। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপহার হিসেবে বইটি তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রডো, জাতিসংঘ মহাসচিব, কানাডার প্রেসিডেন্টসহ অনেক বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্বের হাতে। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন বইটির মূল প্রকাশক হলেও এর পেছনে রয়েছে অনেকে অজানা গল্প। সেই গল্প জানতে দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় বইটির অন্যতম উদ্যোক্তা (প্রযোজক) শায়ান সিরাজের সাথে। তিনি জানান ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’-এর আদ্যোপান্ত।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ বইটিতে কী কী রয়েছে?
শায়ান সিরাজ: ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ মূলত জুলাই বিপ্লব চলাকালে এবং পরে শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের ছবিসংবলিত আর্টবুক। বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে চলমান আন্দোলনের সময় দেয়ালে গোটা বাংলাদেশের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিল শিক্ষার্থীরা। এটা মূলত তাদের ৩৬শে জুলাইয়ের গল্প। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আবু সাঈদের সেই দু’হাত তুলে বুলেটের সামনে বুক পেতে দাঁড়ানোর সেই সাহসী প্রতিচ্ছবি, মুগ্ধের সেই পানির বোতল হাতে নিয়ে ‘পানি লাগবে পানি?’ বলে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার চিত্র, বাংলাদেশের জেন-জিদের হার না মানা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি, যা গ্রাফিতির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিল শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক মুক্তির যেই আকাঙ্ক্ষা, দীর্ঘ সময় চলে আসা সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের চিত্র, যা মুখে বলা যেত না; তা গ্রাফিতির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছিল তারা। গ্রাফিতিতে এদেশে বসবাসকারী সব ধর্মের মানুষের এক জায়গায় এক সমাজে বসবাসের চিত্র যেমন এঁকেছেন, তেমনি বাদ দেননি পশুপাখিদের অধিকারের কথাও। মানুষের মতো পশুপাখিদেরও রয়েছে অবাধ বিচরণের স্বাধীনতা। তাদেরকে জোড় পূর্বক আটকে রাখার চিত্র। দেয়ালে লেখা হয়েছে বিখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণা যোগায় এমন কিছু কবিতার লাইন, যার মাধ্যমে দেশবাসীর মনে শক্তি সঞ্চার করেছে শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে তাদের চিন্তাচেতনাকেও গ্রাফিতিতে তুলে ধরেছিলেন তারা। জুলাই অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট নানা গ্রাফিতি চিত্র রয়েছে এই বইতে। এছাড়াও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এখানে। এই বইটিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ছবির পাশে কিউআর কোড স্ক্যান করার ব্যবস্থা রয়েছে। কিউআর কোড স্ক্যান করলে একটা এআর স্টুডিও অ্যাপ্লিকেশন আসবে। এটার মাধ্যমে ছবির উপরে ধরলে ছবির গল্পটি ভিডিওতে দেখা যাবে। যেমন আবু সাঈদের ছবির পাশের কিউআর কোড স্ক্যান করে শহীদ আবু সাঈদ কীভাবে গুলিবিদ্ধ হলো সেই চিত্র দেখা যাবে। শহীদ মীর মুগ্ধর ছবির পাশে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করে ‘পানি লাগবে পানি?’ সেই দৃশ্যের ভিডিও দেখা যাবে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ এই নামটি কীভাবে এসেছে এবং এর মাধ্যমে কী বার্তা দিতে চেয়েছিলেন?
শায়ান সিরাজ: সবাই যখন আলোচনায় বসি তখন সবাই সবার মতো নাম প্রস্তাব দেন। তারপর সবাই ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামটাতেই একমত হয়েছি। এর অর্থ হলো বিজয়ীদের শিল্প। যেহেতু তখন বাংলাদেশে একটি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। যার পুরো কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। তারা তাদের সহযোদ্ধাদের জীবনের বিনিময়ে, নিজেদের অঙ্গহানি ও তাদের সাহসী মনোবলের মধ্য দিয়ে এই বিজয় অর্জন করেছিল। তাই এই নামটাই সবার কাছে ভালো লেগেছে।

গ্রাফিতি চিত্র দিয়ে যে একটা বই বানানো যায় এবং যেটার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানসহ গোটা বাংলাদেশের চিত্র ফুটিয়ে তোলা যাবে, এমন ভাবনা কোথা থেকে আসলো আপনাদের মনে?
শায়ান সিরাজ: জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন ঢাকায় ফিরেন, তার ফিরে আসার সময় সেখানে আমাদের একজন বন্ধু ছি‌ল। তার নাম আনিস জামান। তার সাথে ড. ইউনূসের খুবই ভালো সম্পর্ক। তিনি ড. ইউনূসের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় বসেছেন। এর ফাঁকে আমাদের কাছেও আসতেন। তখন আসলে দেশে কি হবে, না হবে; সবকিছু নিয়ে সবাই খুব চিন্তিত ছিল। তখন হঠাৎ ড. ইউনূস আনিস জামানকে বললো, আমাকে তো নিউইয়র্ক যেতে হবে। আমাকে তো কিছু উপহার দিতে হবে। কি দেয়া যায়? তখন দু’জনার কথার মধ্যে দিয়ে উঠে আসলো যে, বাইরে তো বিভিন্ন স্ট্রিট গ্রাফিতি আছে! তখন ড. ইউনূস বললো, তোমরা কি গ্রাফিতি দিয়ে একটা বই বানাতে পারবা? তখন আনিস তার কাছ থেকে সময় নিয়ে আমার বাসায় আসেন। তখন আমি, আমার স্ত্রী তাজরিনা মান্নান শিরাজ , আনিস ও আমার আরেকটা বন্ধু তৌফিক বারি ছিলো। মূলত এই চারজনই আমরা কো-প্রডিউসার (সহ- প্রযোজক)। তখন আলোচনায় বসে আনিস আমাকে বলে, স্ট্রিট গ্রাফিতি বই বানানো সম্ভব? তখন আমি বলি যে, কেন নয়? আমার স্ত্রীর আগে থেকেই বই বানানোর কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। কারণ সে ফ্যাশন ডিজাইনার। তখন সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা এটা করবো। তারপর আনিস জামানকে অফিসে ডাকলাম এবং মোর্শেদ মিশু নামের একজনকে কল করলাম। যিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন কার্টুন করে, পথ নকশা করে। তাকে পুরো বিষয়টা জানালাম। তখন আগস্টের ৯/১০ তারিখ। ইউএন নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলি হতে দুই সপ্তাহ বাকি ছিল একটা প্রকল্প বাস্তবায়নের। তারপর আমরা এবং আমাদের টিম এই কাজটা শুরু করি। মোর্শেদ ভাই, আনিস ভাই এবং আমার অফিসের গ্রাফিক্স টিম সবাই মিলে বসে প্রথম বইটা রেডি করি। সেটা ছিল ৩০০ কপি‌। সেই ৩০০ কপি ড. ইউনূসের কাছে পৌঁছে দেয়া হলে তিনি ইউএন অ্যাসেম্বলিতে নিয়ে যান। তখন সেটা তিনি তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘ মহাসচিব, কানাডার প্রেসিডেন্টসহ একাধিক বিশ্ব নেতাদের হাতে তুলে দেন। এছাড়াও ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ও ফোর্বস ৪০০ সামিট অন ফিলানথ্রপি সম্মেলনেও তিনি বিশ্ব নেতাদের হাতে এই বই তুলে দেন। এই তিন জায়গায় বিতরণ করে ৩০০ কপি শেষ হয়ে যায়। পরে প্রধান উপদেষ্টা বললেন, এটা খুব ভালো ছিল। আমাকে আরও কিছু বই তৈরি করে দাও। আগেরগুলো ছিল প্রথম সংস্করণ। সেগুলো একটু সাধারণ ছিল। ফটো অ্যালবাম টাইপের। শুধু ছবি এবং কিছু লেখালেখি। যখন প্রধান উপদেষ্টা আবার বললো যে এবার কয়েক হাজার কপি লাগবে, তখন আমরা একটু সময় নিলাম। কারণ সবাই যে যার মতো কেউ দেশে, কেউ বিদেশে। তারপর যখন সবাই দেশে আসি এবং একত্রিত হয়ে আবার আলোচনায় বসেছি। এটা ছিল সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা আরেকটু অর্থ ব্যয় করি‌। কারণ এটা তো ভালো জায়গায় যাচ্ছে। বিশ্বের বড় বড় জায়গায় যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিচিতিও বাড়ছে। তো প্রথম বইটা ছিল কাগজের তৈরি। এবং উপরে একটা কাগজের তৈরি কভার। পরবর্তীতে এটা বাদ দিয়ে সরাসরি কভার পেইজ তৈরি করলাম। ডিজাইনেও কিছু পরিবর্তন এনেছি এবং কিছু কিছু অংশ বাড়িয়েছি। কাগজের মানসহ অনেক দিকেই পরিবর্তন আনা হয়েছে। ছবিতে যে গ্রাফিতি রয়েছে, তার শিরোনামগুলো বাংলায় ছিল। আমরা নিচে ইংরেজিতে তার অনুবাদ করেছি।

ঢাকাসহ সারা দেশে এত গ্রাফিত্তির মধ্য থেকে বইয়ে থাকা গ্রাফিত্তিগুলোই কেন রাখা হলো? কীভাবে সংগ্রহ করেছেন?
শায়ান সিরাজ: মোর্শেদ মিশু ভাই তার ছোট ভাইকে ফোন দিয়েছিল, যিনি খুব ভালো ছবি তোলেন। সে মোর্শেদ মিশু ভাইয়ের ফোন পেয়ে ছবি সংগ্রহ শুরু করেছিলো। মোর্শেদ মিশুর ছোট ভাই অভিজিৎ পুরো ঢাকার শহর ঘুরে ছবিগুলো তুলেছে। গাজিপুরেও গিয়েছে। সেখান থেকেই প্রাথমিক ছবি সংগ্রহ। এছাড়া ঢাকার বাইরে আমাদের খুব কাছের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড ছিল চিটাগাংয়ে। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আয়মান জামান। তাকে জানালে সে তার শিক্ষার্থীদের বলেছে যে, চিটাগাংয়ে যা আছে, তা যেন তারা সংগ্রহ করে দেন। একইভাবে আমার অফিসের সেলস টিমের যে যে অঞ্চলে ছিল বরিশাল, খুলনাসহ সারাদেশে ওদেরকে বললাম। ওরা সবাই যার যার যতটুকু সম্ভব ওরা পাঠিয়েছে। কারণ আমাদের হাতে বেশি সময় ছিল না। এভাবেই সংগ্রহ করা। সবশেষে আমাদের পুরো টিম একসাথে বসে সব থেকে ভালো ছবিগুলো চূড়ান্ত করেছি। এখন বিষয় হলো, অনেক বিখ্যাত ছবি এখানে রয়েছে, যা মুছে ফেলা হয়েছে, অথবা পুনরায় আঁকা হয়েছে। কিন্তু এই বইয়ের ছবিগুলো কিন্তু একেবারে মূল ছবি। এগুলো এখন অনেক জায়গায় পাওয়া যাবে না।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ যখন তৈরি করেছেন, তখন তো জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন সরকারের তরফ থেকে গঠন হয়নি। তবুও প্রকাশক হিসেবে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন কেন?
শায়ান সিরাজ: জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন হবে মূল প্রকাশক- এই ধারণাটিও ড. ইউনূসের থেকে আসছিল। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশক হোক। আমরাও রাজি হয়েছি। তখন থেকেই জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন তৈরি করার পরিকল্পনা তার ছিল। কারণ এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা, তারাই মূল।

বইটি তো বাজারে সচরাচর দেখা যায় না। যদি কেউ সংগ্রহ করতে চায়, তাহলে কীভাবে সংগ্রহ করবে?
শায়ান সিরাজ: বইটি আসলেই প্রথম থেকে বাজারে আসেনি। মার্চ মাস থেকে বিক্রি হতে শুরু করেছে রকমারি.কম অনলাইনে। আর এপ্রিল থেকে পাওয়া যাচ্ছে ‘বুক ওয়ারম’ শাহাবুদ্দিন পার্কে। এখন যদি কেউ চায় তাহলে সে সংগ্রহ করতে পারবেন।

বইটির বাংলা ভার্সন হয়নি কেন?
শায়ান সিরাজ: সত্যি বলতে আমরা চাচ্ছিলাম যে বইটা বিশ্বের অনেক দেশের ভাষায় হোক। তবে নানা কারণে আর হয়ে উঠেনি। তবে আমাদের ইচ্ছা ছিল বাংলাসহ অনেক ভাষায় করার। এখন যদি জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন চায়, তাহলে তারা উদ্যোগ নিয়ে এটা করতে পারে।

চাইলে তো এমন ঘটনা সংশ্লিষ্ট অনেক মূল ছবি পাওয়া যেত। সেগুলো না যুক্ত করে শুধুই গ্রাফিতি কেন?
শায়ান সিরাজ: আমি বলতে চাই যে, বাংলাদেশের জন্য একটু উদ্ভাবনী কিছু নিয়ে আসা ছিল আমাদের লক্ষ্য। বিদেশে সচরাচর হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এবারেই প্রথম। যেই অবস্থা ছিল মানুষের যে, তারা বলতে পারছিল না। দেয়ালে লেখার মাধ্যমে দেখাতো। বার্তা দিতো। অরিজিনাল ছবি দিয়ে সচরাচর অনেক বই তৈরি হয়েছে। তবে আমরা নতুনত্ব এনেছি। বাংলার মানুষের না বলা কথাগুলো তারা দেয়াল লিখনের মাধ্যমে যে প্রকাশ করেছে , তা আমরা তুলে ধরেছি।

গ্রাফিতি চিত্র নিয়ে আপনাদের কোন পরিকল্পনা আছে কিনা?
শায়ান সিরাজ: বাংলাদেশে যেমন রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্ট থেকে যে বৈদেশিক মুদ্রা আসে, তা কিন্তু আমাদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে। অন্যথায় সচল থাকতো না। আমাদের ইচ্ছা ছিল যে স্ট্রিট আর্টকেও আমরা একটা প্লাটফর্ম দিতে পারি কি না। তাহলে কিন্তু গ্রাফিতি একেও তরুণ ছেলে মেয়েরা একটা ইনকাম করতে পারতো। চাইলে পুরো রাজধানীকে গ্রাফিতির আওতায় নিয়ে আসা যেত। এটাকে চাইলে ট্যুরিজমের আওতায় নিয়ে আসা যেত। বিদেশি পর্যটকদের বলা যেত যে তোমরা কি স্ট্রিট আর্ট দেখতে চাও? তাহলে ঢাকায় আসো। এটা কিন্তু একটা শিল্প হতে পারতো। পরিকল্পনা ছিল অনেক। তবে এখন সরকার চাইলে এটা করতে পারে।

বারবার মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রাফিতিগুলো টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নেয়া উচিত কি না, আপনি কি মনে করেন?
শায়ান সিরাজ: অবশ্যই সরকারের উচিত এগুলো সংরক্ষণ করা। এর দিকে নজর রাখা উচিত। শুধু জুলাইয়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য নয়, সৌন্দর্যবর্ধনেও গ্রাফিত্তি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। সুতরাং পুরো ঢাকাকে গ্রাফিতির আওতায় নিয়ে আসা উচিত। এতে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। মানুষের কাছে দেখতেও ভালো লাগবে।

যতবার মুছে ফেলা হচ্ছে ততবার তরুণরা নতুন উদ্যমে আবার পুনরায় জুলাইকে ফুটিয়ে তুলছে। তরুণদের এই উদ্যমী মনোভাবকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
শায়ান সিরাজ: আমি মনে করি তরুণরা আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। ভবিষ্যৎ পৃথিবী তরুণদের হাতে। তাদেরকে যদি আমরা ভালো কাজের মাধ্যমে ফোকাস করতে পারি, তাহলে সকলের জন্য ভালো ‌হবে। আমরা চাই তারা খারাপ দিকে না গিয়ে তাদের শক্তিকে ইতিবাচক কাজে ব্যয় করুক।

আপনাদের বানানো বইটি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরছেন ড. ইউনুস। এনিয়ে আপনাদের টিমের অনুভূতি জানতে চাই।
শায়ান সিরাজ: এই প্রজেক্ট থেকে আমরা কোন টাকা নেইনি। আমরা অরাজনৈতিক ব্যক্তি। এখানে আমাদের ব্যক্তিগত কোনো মন্তব্য নেই। আমরা শুধু গ্রাফিতিগুলো তুলে ধরেছি। তবে নিশ্চয়ই আমাদের কাজকে এতটা মূল্যায়ন করা হয়েছে, এটা অকল্পনীয়। দেশকে তুলে ধরতে পেরে আমরাও আনন্দিত। এই কৃতিত্ব আমাদের টিমের প্রত্যেকটি সদস্যের। দেশের প্রয়োজনে সবসময় সবার উচিত পাশে থাকা। তাহলেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।