Image description

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতায় শুরু করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসা। এতে লাভের টাকা দিয়ে দৈনন্দিন নিজেদের খরচ নিজেরেই মেটান। তিনটি আবাসিক হলের সামনে বিকাল হলেই কেউ কলা, মধু, দই-চিড়া, কেউ কেউ আবার ডিম, খেজুর নিয়ে বসেন। এই উদ্যোগকে অনেকেই ক্ষুদ্র পেশা হিসেবে দেখলেও অনেকে স্বনির্ভর হওয়ার ধাপ হিসেবে দেখছেন।

সারা দিন ক্লাস, পরীক্ষা, সেমিনার ও অ্যাসাইনমেন্টের ব্যস্ততার পরও তারা এই ব্যবসার জন্য সময় বের করে নেন। তাদের দেখাদেখি দিন দিন আরও শিক্ষার্থী উদ্যোগী হয়ে শুরু করেছেন বিকল্প উপার্জন। পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে হাতে-কলমে জীবনের পাঠ নিচ্ছেন বলে জানান এসব শিক্ষার্থী। 

তারা বলছেন, শুধু অর্থনৈতিক কারণ নয়, এমন কাজকে তারা দেখছেন বাস্তব জীবনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। ব্যবসার মাধ্যমে অনেকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, শিখছেন বাজার বিশ্লেষণ, গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও আয়-ব্যয়ের হিসাব।

শিক্ষকরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ কেবল আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া নয়, বরং তরুণদের আত্মবিশ্বাস, উদ্যম ও সমস্যা মোকাবিলার ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই ক্ষুদ্র ব্যবসা হতে পারে ভবিষ্যতের বড় পরিবর্তনের বীজ।

তবে উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও সমস্যা দেখছেন অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত জায়গা, স্টল অনুমোদন না থাকায় রাস্তায় বসে খোলা আকাশের নিচে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু সিলেট বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চল হওয়ায় বৃষ্টির দিনে ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয় তাদের। অস্থায়ী দোকান বা ছোট ব্যবসার জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা না থাকায় অনেক সময় নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টল কিংবা নির্দিষ্ট জায়গা থাকলে অন্য শিক্ষার্থীরাও ব্যবসায় আগ্রহী হতেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই।

তরুণ উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘সারা দিন ক্লাস পরীক্ষা শেষে বিকালে কিছু সময় আমরা কয়েকজন পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করে থাকি। আবাসিক হলে আমরা যে খাবারটা প্রতিদিন খাচ্ছি, তাতে পুষ্টিগুণ নেই বললেই চলে। তাই এটা আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্ধারিত কোনো জায়গা কিংবা ছাউনি না থাকার ফলে বৃষ্টি হলে বেচাকেনা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সীমিত আকারে স্টল কিংবা চাওনি ব্যবস্থা করলে সবার জন্য মঙ্গলজনক হতো।’