
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। তিনি বলেছেন, একজন উপদেষ্টাকে পানির বোতল মারা এটাও কিন্তু কম ষড়যন্ত্রের অংশ নয়।
শুক্রবার (১৬ মে) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা নির্বাচনের লক্ষ্যে তালহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যাকাণ্ড একটি ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে এ্যানি বলেন, ছাত্রদল উদীয়মান নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। এটি চক্রান্তের অংশ। বিচ্ছিন্নভাবে এটা দেখার সুযোগ নেই। কেউ কেউ পরিবেশটাকে ঘোলাটে করতে চায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল আসছে। অনেক মিছিলই ঢাকা শহরে হচ্ছে। এদের সঙ্গে বসতে হবে। এদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আলোচনা করে এদেরকে বিদায় দিতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব দাবি এখনই মানতে পারবে না। যেখানে ১৭ বছর লুটপাট হয়েছে, অনিয়ম-অত্যাচার হয়েছে। নির্বাচিত সরকার এসেও সব সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। এখন অন্তর্বর্তী সরকার এ অল্প কয়দিনের মধ্যে সব দাবি মানতে পারবে না। অনেকে দাবি তুলছে। এসব সমাধানের চেষ্টা বের করতে হবে। কিন্তু সেখানে পুলিশ যেভাবে ছাত্রদেরকে পিটিয়েছে, এটাও কিন্তু ঠিক করেনি। এর ভেতরে আবার ষড়যন্ত্র ঢুকেছে। ষড়যন্ত্রটা হচ্ছে, পরিবেশটাকে উত্তপ্ত করে ভোটের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করা, স্বাভাবিক পরিবেশকে অস্বাভাবিক করা। একটি চক্র অর্থকড়ি নিয়ে বসে আছে। তারা দূর থেকে এ কাজগুলো করাচ্ছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের দাবি, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করুন, দৃশ্যমান করুন। এখন পর্যন্ত একটা বিচারের রায় আসতে দেখিনি, একটা আদেশ দেখিনি। হাসিনার সঙ্গে যারা ছিল, উপর থেকে নিচ পর্যন্ত যারা লুটপাট চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা তো অনেক হয়েছে। কিন্তু বিচার তো দৃশ্যমান হতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যদি দ্রুত স্বচ্ছ বিচার হলে একদিকে হাসিনা নিষিদ্ধ হবে আরেক দিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে। এটা আমরা বার বার বলে আসছি।
দ্রুত ভোট না হলে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, দ্রুত সংস্কার শেষ হতে হবে, দ্রুত নির্বাচন শেষ করতে হবে। সরকারের কাছে আমরা বারবার দাবি জানাই। না হলে এই অন্তর্বর্তী সরকার এখন কিছু কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা সহযোগিতা করছি এবং করব। কিন্তু কোনোভাবে যদি বড় ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হয়, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়, আমাদের দেশ কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের ভোট প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জনগণের শাসন না থাকা পর্যন্ত দেশের অস্থিরতা দূর হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। স্থিতিশীলতা না থাকলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে থাকবে। বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট এখনো আসে নাই। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হওয়া আমার-আপনার জন্য ক্ষতিকর।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্য হাফিজুর রহমান ও সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ প্রমুখ।