
রাজধানীতে গত দুইদিন ধরে বৃষ্টির দেখা মিললেও বায়ুদূষণ কমছে না। বাতাসে কমছে না দূষিত বায়ুকণার পরিমাণ। বরং বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার অবস্থার অবনতি হয়েছে।বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটের রেকর্ডে দেখা যায়, ঢাকার বায়ুমান ১৮৪, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। গতকাল বুধবার ঢাকার বায়ুমান ছিল ১৬৩, যা অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়ায় দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা পঞ্চম স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে।আজ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষে আছে সেনেগালের ডাকার। শহরটির বাতাসে দূষণের মাত্রা খুব অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে। একিউআই সূচকে শহরটির বায়ুমান ২১৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা দ্বিতীয়, ৪র্থ ও ৫ম শহর হলো— ভারতের দিল্লি (১৮৬), চিলির সান্তিয়াগো (১৫৯) ও ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৫২)।বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।