Image description
 

বগুড়ায় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজিত সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচিতে “ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চ”র ব্যানারে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে উদীচীর কার্যালয়েও। এ সময় উদীচী ও সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের সাতজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৪ মে) বিকালে শহরের সাতমাথা ও শহীদ খোকন পার্কে এ ঘটনা ঘটে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের পাল্টা পাল্টি কর্মসূচিতে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পুলিশ অবস্থান নেওয়া তেমন ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।”

বগুড়া উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শাহিদুর রহমান বিপ্লব বলেন, “স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বার বার আমাদের জাতীয় সংগীতকে নিয়ে যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। লাখো শহিদের রক্তে লেখা আমাদের ইতিহাসে এই ধৃষ্টতা মেনে নেওয়া যায় না। জাতীয় সংগীত গাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়ার এ অপচেষ্টাকে রুখতে বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টা দিকে শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশেনের কর্মসূচি দেওয়া হয়।”

তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ে নেতাকর্মীরা মুক্তমঞ্চে এসে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ফ্যাসিবাদীদের বিচারের দাবিতে “ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চ” নামে একটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। তখন পুলিশের পরামর্শে তারা পাশেই উদীচীর দলীয় কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে বাধা পেয়ে শহীদ খোকন পার্কে সমবেত হন তারা।

কর্মসূচিতে উদীচী সভাপতি সোবহান মিন্নু, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি বায়েজিদ রহমান, যুব ইউনিয়নের সভাপতি ফারহানা আকতার শাপলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকরা জানান, সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত শুরু করলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের লোকজন সেখানে এসে “ভুয়া, ভুয়া”, “ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার-সাবধান”, “র’এর দালালেরা হুঁশিয়ার-সাবধান”, “আগস্টের দালালের হুঁশিয়ার-সাবধান”, “দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”, “গোলামী না আজাদি, আজাদি আজাদি”সহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে।

উদীচীর শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের লোকজন হামলার চেষ্টা করে। তখন দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের লোকজন জাতীয় সংগীতে অংশ নেওয়াদের মারধর শুরু করে।

এতে সিপিবির জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাওন পাল, ক্ষেত মজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভ শংকর গুহ রায়, সিপিবির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ঝিলাম, শামীম হোসেন জুয়েল ও আকাশ আহত হন।

এরপর ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের লোকজন উদীচী কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা সংগঠনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ছিঁড়ে ফেলে। পরে পুলিশ কঠোর অবস্থানে গেলে ২০ মিনিট পর ফিরে আসার ঘোষণা দিয়ে ফ্যাসিবাদ মঞ্চের নেতাকর্মীরা চলে যায়। পরে ঘটনাস্থল ও আশপাশে

ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে কারা এ হামলা চালিয়েছে, এ প্রসঙ্গে পুলিশ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি।

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেতাকর্মীরা দাবি করেন, যারা বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধ করছে তারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

ঘটনার পর পরই ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের লোকজন চলে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।