Image description
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার দলের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ। মানিকগঞ্জের হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার দলের এমপি হয়ে অবৈধভাবে গড়েছেন টাকার পাহাড়। একটি নয় দুটি নয় করেছেন বিয়ের হেট্রিক এরপরও টেকেনি তার সংসার। ফ্যাসিস্ট মমতাজের অপকর্মের ফিরিস্তি যেনো বলে শেষ করার মত নয়।


ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ। সম্প্রতি তাকে ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরই বেরিয়ে আসতে থাকে মমতাজকে ঘিরে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় নিজ এলাকায় মমতাজ গড়ে তুলেছিলেন এক ত্রাসের রাজত্ব। ৫০০ শতাংশ জমির ওপর রয়েছে মমতাজের ডুপ্লেক্স বাড়ি, রেস্টুরেন্ট, কোল্ড স্টোরেজসহ স্থায়ী মেলার মঞ্চ। শুধু তাই নয় নামে বেনামে মমতাজের রয়েছে মানিকগঞ্জ ও ঢাকায় একাধিক বাড়ি। ২ টি হাসপাতালও নির্মাণ করেছেন মমতাজ। দেশের বাইরেও মমতাজের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায় লোকমুখে।


মমতাজ তার বিশাল ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হরিরমপুরের বালুমহলসহ তার এলাকার প্রতিটি বালুমহল রেখেছিলো নিজের নিয়ন্ত্রণে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার পোষা ক্যাডার বাহিনী দিয়ে করতো হত্যা-গুম। ফ্যাসিস্ট মমতাজ যেনো ছিলেন এই এলাকার এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। পারিবারিক জীবনেও রয়েছে এই ফ্যাসিস্টের অহরহ এলোমেলো কর্মকাণ্ড। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের চরদুর্গাপুর গ্রামে ১৯৭৪ সালে তার জন্ম। বাবা মধু বয়াতি ছিলেন বাউলশিল্পী। বাবার সাথে গাও গ্রামে গান করে যা টাকা পেতো তা দিয়েই চলতো তাদের সংসার। মমতাজ বাউল সম্রাট রশিদ সরকারকে প্রথম বিয়ে করেন সেটি টেকেনি এরপর মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলীর সাথে ঘর বাঁেধন। এই সংসারে থাকতেই পরকিয়ায় লিপ্ত হন তার হাসপাতালেরই এক ডাক্তারের সাথে। আগের সংসারের ইতি টেনে বিয়ে করেন সেই ডা. মঈন হাসান চঞ্চলকে, কিন্তু সেটিও টেকেনি শেষপর্যন্ত।


সংসার জীবনে ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় মত্ত থাকলেও রজনীতির খেলায় ঠিকই জিতে যান মমতাজ। জানা যায়, প্রথমে বিএনপিতে যোগ দিতে চাইলেও সেখানে সুযোগ না পেয়ে পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন এই ফ্যাসিস্ট। এরপরই বদলে যেতে থাকে তার ভাগ্য। তেলবাজির গান ও চটুল কথাবার্তা দিয়ে দলের প্রধান শেখ হাসিনার কাছের মানুষ হয়ে ওঠেন। পেয়ে যান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টিকিটও। আওয়ামী লীগের দুইবারের সাবেক এই সংসদ সদস্য ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সংসদেও গান গেয়ে শুনিয়ে তৈল মর্দন করতেন নিয়মিত। আর বিরোধী দলকে নিয়ে করতেন নানা হাসি ঠাট্টা আর মশকরা।
 

প্রথমবারের মতো ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন মমতাজ। এরপর টানা দুইবার নৌকার টিকিটে হোন সংসদ সদস্য। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এরপরও বসে ছিলেন না এই ফ্যাসিস্ট ফেসবুকে নানা সময় সরব দেখা যেতো তাকে। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে রিমান্ডে এখন ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যা মামলার এই আসামী।