Image description

ঢাকার ধামরাইয়ে সুন্দরী এক স্ত্রীকে নিয়ে দুই স্বামীর মধ্যে কাড়াকাড়ি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ধামরাই থানার সামনে চরম হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে ধামরাই থানার এক এসআইয়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টি প্রশমিত হয়েছে।

ধামরাই থানার জিডির সূত্র ধরে সুন্দরী ওই স্ত্রীকে প্রথম স্বামীর জিম্মায় প্রদান করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ধামরাই থানার পুলিশ সূত্র। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেলা সদরের স্কুলশিক্ষক মো. সুলতান উদ্দিনের ছেলে স্কুলশিক্ষক মো. অলিউল্লাহ দীর্ঘ ১৫ বছর আগে ঢাকার ধামরাই উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের শোলধন এলাকার এক মেয়েকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান নেই।

কিছু দিন আগে ওই স্কুলশিক্ষকের স্ত্রীর সঙ্গে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানা সদরের মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শহিদুর রহমানের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই মধ্যে স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের হাত ধরে দুইবার পালিয়ে যান ওই স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী। প্রতিবারই স্ত্রীকে নিজের ঘরে ফিরিয়ে আনেন অলিউল্লাহ।

এক সপ্তাহ আগে অলিউল্লার ঘর ছেড়ে পালান তার স্ত্রী। কোনোভাবেই তার সন্ধান না পেয়ে তিনি ধামরাই থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ ডায়েরির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আব্দুর রহমান মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের   মাধ্যমে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই স্কুলশিক্ষকের নিখোঁজ হওয়া স্ত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তিনি থানার সামনে রাস্তায় এলে তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্বামী তাকে নিয়ে টানাটানি শুরু করেন।

পরে এসআই আব্দুর রহমান উভয়কে নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসেন। ধামরাই থানার সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে প্রথম স্বামী স্কুলশিক্ষক মো. অলিউল্লাহর জিম্মায় দেন স্ত্রীকে। 

স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী শেফালী আক্তার বলেন, আমি আমার প্রথম স্বামীর ঘর-সংসার করতে চাই না। এরপরও আমার পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী জোর করে তার ঘর-সংসার করতে আমাকে বাধ্য করেন। আমার বিয়ের ১৫ বছরেও আমার প্রথম স্বামী কোনো সন্তানাদি দিতে পারেননি। কাজেই আমি মা হতে পারছি না। আমি মা হতে চাই। নারীর জীবনের অহংকার হচ্ছে একজন মা হওয়া। তাই আমি স্বামী হিসেবে শহিদুর রহমানকে গ্রহণ করেছি। আমাকে জোর করে আমার প্রথম স্বামীর ঘর-সংসার কেউ করাতে পারবে না। প্রয়োজনে আমি বিষপানে কিংবা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করব। আমি আমার প্রথম স্বামীর ঘর-সংসার করব না। 

এ ব্যাপারে দ্বিতীয় স্বামী শহিদুর রহমান বলেন, আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে ঘর-সংসার করতে চায়। তাই আপনারা জোর করে আমার স্ত্রীকে প্রথম স্বামীর ঘরে পাঠাবেন না। আমি আমার স্ত্রীর জীবন  ভিক্ষা চাই আপনাদের কাছে। 

প্রথম স্বামী স্কুলশিক্ষক মো. অলিউল্লাহ বলেন, আমি ১৫ বছর যাবত বিয়ে করেছি। আমাদের ঘরে কেন সন্তানাদি হয়নি- তা কেবল আল্লাহ পাকই বলতে পারবেন। এজন্য তো আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইনি। কারণ আমি আমার স্ত্রীর মনে কোনো প্রকার কষ্ট দিতে চাই না। সে দুইবার আমার ঘর ছেড়ে পালিয়েছে তারপরও আমি তাকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছি এবং স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছি। এবারও আমি তাকে স্ত্রীর পূর্ণ মর্যাদা দিয়েই আমার ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি কখনই তার প্রতি কোনো প্রকার অমর্যাদা করব না। 

এ ব্যাপারে ধামরাই থানার এসআই মো. আব্দুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামী ধামরাই থানায় নিখোঁজ জিডি করেছিলেন। ওই জিডির সূত্র ধরেই তাকে আমি উদ্ধার করেছি। পরবর্তীতে ওই গৃহবধূকে তার প্রথম স্বামীর জিম্মায় দিয়েছি।