Image description

ফরিদপুরের সদর উপজেলায় নুরুজ্জামান বুলবুল (৪৮) নামে এক ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক সুইসাইড নোট, যার একটিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নাম উঠে এসেছে।

সোমবার (১২ মে) বিকেল ৪টার দিকে কৈজুরি গ্রামের পৈতৃক বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এরপর লাশ পাঠানো হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পুলিশ জানিয়েছে, এটি নিছক আত্মহত্যা, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে—তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধার করা একটি চিরকুটে লেখা ছিল—‘বিল্লাল ভাই আমাকে আর বাঁচতে দিলেন না।’ ধারণা করা হচ্ছে চিঠির বিল্লাল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। একসময় আলোচিত মানি লন্ডারিং মামলায় তিনি কারাভোগও করেন। একই মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, যার মুরগির খামারে বিল্লাল ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন।

জানা যায়, নিহত নুরুজ্জামান বুলবুল ও বিল্লাল হোসেনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তারা যৌথভাবে মুন্সিবাজার বাইপাস মোড়ে একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করেন। তবে বিগত বছরগুলোতে তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন ও পারিবারিক কারণে দূরত্ব তৈরি হয় বলে স্থানীয়দের দাবি।

নিহতের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বুলবুলের স্ত্রী ও তিন মেয়ে রয়েছে। মেঝ মেয়ের প্রথম বিয়ে বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে হয় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদের সঙ্গে। এই ঘটনা পরিবারে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দেয়। পরে বুলবুল পারিবারিক কলহ নিরসনে কিছু জমি মেয়েদের নামে লিখে দেন।

অন্য একটি চিরকুটে তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্তে লেখেন, ‘আল্লাহ পাক যদি আমার মৃত্যু দেয় তাহলে আমার মেয়েরা যেন আমার মরামুখ না দেখে আর কবর যেন আমার মায়ের কবরের পাশে হয়, এ বাড়িতে নয়।’

ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।