
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়েছে। এতে হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, বয়সের সীমাবদ্ধতা না রাখা, সভাপতি নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) উপাচার্যের কার্যালয়-সংলগ্ন ভার্চ্যু য়াল ক্লাসরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় অন্তত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সব ছাত্র সংগঠন মতামত দিয়েছে, হল কম্পাউন্ডের বাইরে ভোটকেন্দ্র রাখা; ২০১৮-১৯ সেশনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার চিন্তা করা (তাদের রেজাল্ট পাবলিশ হলেও যেন নির্বাচনে অশংগ্রহণ করতে পারেন); Secretary of Indigenous পদটি রাখা; সভাপতি পদ ছাত্র নির্বাচিত হতে হবে।
পাশাপাশি ছাত্রদলের দাবি ছিল, বয়েসের সীমাবদ্ধতা থাকা যাবে না। এ ছাড়া অর্থ সম্পাদকের পোস্ট থাকা ও ডাকসু নিয়মিত হওয়ার কংক্রিট নিয়ম করার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, এনসিপির সংগঠনসহ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী মাসের শুরুর দিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া কোন মাসে চলবে, সে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ টাইমলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।
একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর এবং সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সম্বলিত পথ নকশা প্রকাশ করা হলো।
এতে বলা হয়েছে, ডাকসু নিয়ে অংশীজনদের আলোচনা শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর। একই মাসে গণনতন্ত্র চূড়ান্ত করে ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ছয়টি সভা করা হয়। এটি এখন সিন্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
গত জানুয়ারি মাসে কোড অব কন্ডাক্ট রিভিউ কমিটি করা হয়। তারা সাতটি সভা করেছে। এটিও চূড়ান্ত হওয়ার পর সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। কমিটি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময়ও সম্পন্ন করেছে। এসব কাগজ ছাত্র সংগঠনগুলোকেও দেওয়া হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া চলতি মাসেই শেষ হবে। ডিন, প্রভোস্ট ও বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানদের সঙ্গেও এ প্রক্রিয়া চলছে।
নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ সম্পন্ন হবে মে মাসের প্রথমার্ধে। একই মাঝামাঝি সময়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করবে। তবে নির্বাচন কার্যক্রম কোন মাসে চলবে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।