
Oliullah Noman (অলিউল্লাহ নোমান)
বাংলাদেশের টুইস্ট সাংবাদিকতা নিয়ে একদিন আগেও লিখেছিলাম। অনেক বোদ্ধা তখন কমেন্টস-এ বলেছিলেন এই উক্তি তো আমীর-এ জামায়াত বলেছেন। তিনি কোন প্রেক্ষিতে বলেছেন আগে-পড়ে কি বলেছেন সেটা তাদের কাছে বিচার্য ছিল না! তারা পিক অ্যাণ্ড চুজ করেন বিভ্রান্তি তৈরির মানসিকতা থেকে।
এমন অসৎ মানসিকতা নিয়ে মাঝখান থেকে একটা দুইটা ওয়ারড পিক অ্যাণ্ড চুজ করাই হচ্ছে টুইস্ট জার্নালিজম।
আজ আরেকটি এমন টুইস্ট সাংবাদিকতা দেখতে পেলাম। সকালে পত্রিকা গুলোর শিরোনাম দেখে আতকে উঠেছিলাম। শিরোনাম দেখে মনে হয়েছিল শেখ হাসিনা বোধ হয় তদন্তেই নিরদোষ হয়ে গেছেন! ভাবছিলাম, এমন তদন্ত কারা করলেন!! এবং তাজুল ইসলাম এটা প্রচার করলেন কেমন করে!! প্রচণ্ড রাগ মাথা নিয়ে নিউজের ভেতরে পড়লাম।
নিউজের ভেতরে ঢুকে দেখলাম ভিন্ন চিত্র। গণহত্যার আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা দিয়েছেন তাজুল ইসলাম। বলেছেন আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী গণহত্যা নয়। শেখ হাসিনা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন। আরো স্পষ্ট করে বলেছেন যা ঘটেছিল আন্তর্জাতিক সংজ্ঞায় মাস কিলিং বা ম্যসাকার হয়েছে। জেনুসাইড নয়। তখন বুঝলাম ঘটনা কি! কিন্তু শিরোণাম এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন তদন্তেই শেখ হাসিনা নির্দোষ! এই হচ্ছে বাংলাদেশের টুইস্ট সাংবাদিকতা।
অনেকেরই স্মরণে থাকার কথা! ২০০২/২০০৩ সালের ঘটনা। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন বলে একটা প্রচারণা ছিল মুখে মুখে। টুইস্ট সাংবাদিকতায় তখন সরকারের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
ঘটনাটি ছিল রামপুরা এলাকায় দুই সন্ত্রাসী গ্রুপে গোলাগুলিতে ক্রসফায়ারে এক শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তখন ভিকটিম শিশুর পরিবারকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজের সন্তান মারা যাওয়ার উদাহরণ দেন। বলেন-“আমার একমাত্র ছেলে পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমার আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন” । ভিকটিম পরিবারকে শান্তনা দিতে গিয়ে নিজের এই উদাহরণ তখন পুরো সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়ে পড়ে টুইস্ট সাংবাদিকতার কারণে। আগে পড়ে কি ছিল সেটা উল্লেখ না করে প্রচার করা হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিকটিম পরিবারকে বলেছেন আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন। মানে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা চালিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল শিশুর পরিবারকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধুমাত্র বলেছেন-“আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন!” এতে যে কোন নির্বোধের মনে রাগ তৈরি হবে। সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ তৈরি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে এই টুইস্ট করা হয়েছিল তখন। এখনো এমন টুইস্ট সাংবাদিকতা অব্যাহত রয়েছে।
দুইদিন আগেও দেখলাম, আজো দেখলাম এমন টুইস্ট সাংবাদিকতা! আল্লাহ এই জাতিকে ক্ষমা করুন।
আমাদের মনে রাখতে হবে এই বিচারের প্রতি আন্তর্জাতিক নজরদারি রয়েছে। আওয়ামী লীগ হাজারো কোটি টাকা ব্যয় করছে আন্তর্জাতিক লবিষ্টদের পেছনে। পান থেকে চুন খসলে দেশে বিদেশে বিচারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই সবকিছু আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে।