Image description

বরিশালের মুলাদীতে গভীর রাতে প্রবাসীর স্ত্রীকে বাইরে ডাকার প্রতিবাদ করায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বড় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে স্কুল শিক্ষক জাকির হোসেন আকন নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত জাকির হোসেন আকন (৩৮) রামচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি পশ্চিম বোয়ালিয়া গ্রামের ক্বারী মোসলেম উদ্দীন আকনের ছেলে। 

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, স্কুল শিক্ষক আবু হানিফের বাড়িতে হামলা করে একই এলাকার হোসেন আলী ব্যাপারীর ছেলে লতিফ ব্যাপারী ও তার লোকজন। এ সময় নারীসহ কমপক্ষে আরও ৬জন আহত হয়েছেন। 

নিহতের পরিবারের দাবি, তিনি তার বড় ভাই আবু হানিফের ওপর হামলার খবর পেয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে নিহত হন। হামলাকারীরা তাকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। 

খবর পেয়ে মুলাদী থানা পুলিশ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। 

নিহতের ভাই আবু হানিফ জানান, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে তার প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করেন। ওই সময় পাশের বাড়ির লতিফ ব্যাপারী (৫৮) ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয়। লতিফ কথা শোনার জন্য ওই নারীকে বাইরে বের হতে বলেন। ওই নারী ভীত হয়ে ডাকচিৎকার দিলে লতিফ ব্যাপারী বাড়ি চলে যান।

আবু হানিফের বোন খাদিজা ও পারভীন ওই ঘটনার পর পরই লতিফ ব্যাপারীর বাড়িতে যান এবং গভীর রাতে প্রবাসী ভাইয়ের দরজায় ধাক্কা ও নারীকে বাইরে ডাকার কারণ জানতে চান। 

এ নিয়ে হট্টগোলের সৃষ্টি হলে আশপাশে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে লতিফ ব্যাপারীর ছেলে সুমন ব্যাপারী, সুজন ব্যাপারীসহ তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। 

পরে খাদিজা ও পারভীন বাড়ি ফিরলে লতিফ ব্যাপারী ও তার ছেলেরা লোকজন নিয়ে রাত ৩টার দিকে আবু হানিফের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে আবু হানিফ, তার মা সেতারা বেগম, বোন খাদিজা, পারভীন, মাসুমা, ভাইয়ের স্ত্রী তানিয়াসহ ৬জন আহত হন। 

আবু হানিফের বোন পারভীন বেগম জানান, তার ভাই জাকির হোসেন আকন বাড়ির বিপরীত দিকে খালের অন্যদিকে নতুন বাড়িতে বসবাস করতেন। বাড়িতে বড় ভাইয়ের ওপর হামলার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথে এলাকার একটি কার্লভার্ট ব্রিজের ওপর নিহত হন। প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে। 

মুলাদী থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ভোর রাতে স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বর আহত ৩জনকে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।